রবিবার, ১৮ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা
বরকতময় মাহে রমজান

বান্দার মর্যাদা বাড়ে আল্লাহর কাছে

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছেন জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে এ সম্পর্কে আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে। আর প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে?

সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ, সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য। তারা তাওবাকারী, ইবাদতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, রোজা পালনকারী, রুকুকারী, সিজদাকারী, সৎকাজের আদেশদাতা, অসৎকাজের নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারী; আর আপনি মুমিনদের শুভসংবাদ দিন।’ (সূরা তওবা : ১১১-১১২)। সুতরাং আল্লাহতায়ালা রোজা পালনকারীকে সফলকাম ঘোষণা করেছেন। যে সফলতার জন্যই আমরা হন্যে হয়ে ঘুরছি, তা রয়েছে রোজা পালনের মধ্যেই। আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমাকে একটি বিশেষ আমল করার নির্দেশ দিন। জবাবে রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাহলে তুমি সাওম পালন কর, কারণ এর মতো কোনো কিছু নেই। (নাসাই, সহি সনদ)।

রোজাকে আল্লাহ তাঁর নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করেছেন তাঁর সম্মানের কারণে ও তাঁর কাছে গচ্ছিত উত্তম প্রতিফলের কারণে। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, ‘আল্লাহ বলেন, বনি আদম তার প্রতিটি কাজ নিজের লাভের জন্যই করে, এর ব্যতিক্রম হচ্ছে রোজা, এটা সে আমার জন্য করে, আর আমিই এর প্রতিদান দেব।’ (বুখারি, মুসলিম)। রোজার মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। কারণ হাদিসে এসেছে, ‘তবে রোজা সে আমার জন্য রাখে, আর আমি স্বয়ং এর প্রতিদান দেব।’ (বুখারি, মুসলিম)। রোজা আল্লাহর গুণের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করে। কারণ আল্লাহ খান না, পান করেন না, তেমনি বান্দাও আল্লাহর রঙে নিজেকে রঙিন করে নেয়। সাওম পালনকারীকে আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা কল্যাণের সঙ্গে উল্লেখ করতে থাকেন। হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা রোজা পালনের জন্য সাহরি যারা খায়, তাদের কথা আলোচনা করেন।’ (সহি ইবনে হিব্বান)। আরও বলেছেন, ‘হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে, আর যে অসমর্থ সে যেন রোজা পালন করে। কারণ তা তাকে বিরত রাখবে।’ আরও বলেন, ‘শয়তান বনি আদমের রক্তের শিরায় প্রবেশ করে, সুতরাং তোমরা সে শিরাগুলো ক্ষুধার মাধ্যমে দমন করে রাখো।’ আল্লাহর রাস্তায় এক দিন রোজা পালনকারীকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের দূরত্বে রাখবেন। কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, শত বছরের দূরত্বে রাখবেন। (নাসাই)। রোজা পালনকারীর জন্য রোজা হাশরের মাঠে সুপারিশ করবে। সে বলবে, হে আল্লাহ! আমি তাকে খানাপিনা থেকে বিরত রেখেছি, সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। তখন তার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।

রোজা পালনকারীর জন্য একান্তভাবে একটি দরজা রয়েছে, যার নাম রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে কেবল সাওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, www.selimazadi.com

সর্বশেষ খবর