বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

সব দল অংশ নিলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সব দল অংশ নিলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে

কে এম নূরুল হুদা

সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে অতীতে অনেক ভালো নির্বাচনের ইতিহাস রয়েছে। সব দল অংশগ্রহণ করলে এবারও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব। গতকাল আগারগাঁওয়ের ‘নির্বাচন ভবনে’ দাতা সংস্থাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিইসি। হেড অব ইউএনডিপির রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর রবার্ট ডি ওয়ার্ট কিনসের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন প্রতিনিধি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।  বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, আমাদের আইন-কানুন সংশোধন, সীমানা পুনর্বিন্যাস, ভোটার তালিকা হালানাগাদ, কেন্দ্র পুনর্বিন্যাস— সামনে এই কাজগুলো আছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সামর্থ্য আমাদের আছে কি না  বৈঠকে তারা জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, আমাদের হাতে অনেকগুলো আইন আছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট শক্তিশালী। এই কমিশনের জন্য যেসব আইন আছে, তা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। তবে অংশগ্রহণমূলক না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়।

সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমাদের এখানে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ হয় জনসংখ্যার ঘনত্বের ভিত্তিতে। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় যদি ভবিষ্যতে সীমানা নির্ধারণ করতে হয়, তাহলে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোর আসন বেড়ে যাবে। গ্রামাঞ্চলে কমে যাবে। এতে বৈষম্য তৈরি হতে পারে। তাই এসব সমস্যার সমাধানে ভবিষ্যতে জনসংখ্যা নয়, ভোটের সংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণের চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু আইনগত সমস্যা আছে। সেটা সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।

 কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের জন্য আমরা কারিগরি সহযোগিতা চাই। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে ভোটার, প্রার্থী ও ইসি; কার কি দায়িত্ব তা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে। এক্ষেত্রে তারা প্রচারণা উপকরণ প্রস্তুতে সহায়তা করবে।

স্মার্টকার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে চোখের আইরিশ ও দশ আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার মেশিন কিনতে আর্থিক সহায়তা চাই। তবে এগুলো ছাড়াই স্মার্টকার্ড দেওয়া সম্ভব। তাই আমরা প্রকল্পটা আরও বাড়াতে চাই। যদিও নির্বাচনের সঙ্গে স্মার্টকার্ডের সম্পর্ক নেই। তবু আমরা সংসদ নির্বাচনের আগে সবার হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দিতে চাই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার কি হবে এ বিষয়ে তারা (ইউএনডিপি প্রতিনিধি দল) জানতে চেয়েছিল, আমরা বলেছি, এ নিয়ে ইসির কিছু করার নেই। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।

হেড অব ইউএনডিপির রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর রবার্ট ডি ওয়ার্ট কিনস বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের ২১ বছরের সম্পর্ক। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য সব ধরনের কারিগরি সহায়তা করতে চাই। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটা আমাদের বিষয় নয়। এটা সরকারের বিষয়। আমাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে। আমরা মনে করি, কমিশনের নির্দিষ্ট আইন আছে, এ দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সিইসির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১১ জুন ইউএনডিপি, ৬ জুন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার, ৩১ মে মার্কিন রাষ্ট্রদূত, ১৮ মে ভারতীয় হাইকমিশনার এবং গত ১২ মার্চ নরওয়ে ও সুইডেন রাষ্ট্রদূত সিইসির সঙ্গে  বৈঠক করেন।

সর্বশেষ খবর