বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

বেড়িবাঁধে এএসপির লাশ সন্দেহ হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেড়িবাঁধে এএসপির লাশ সন্দেহ হত্যাকাণ্ড

মিজানুর রহমান

রাজধানীর রূপনগর থেকে হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার হয়েছে। মিজানুরের পরিবার জানিয়েছে, তিনি সাহরি খেয়ে ভোর রাতেই বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে পুলিশ বেলা ১১টার দিকে বেড়িবাঁধ বিরুলিয়া ব্রিজের পাশে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় তার গলায় গার্মেন্টের ঝুট কাপড় পেঁচানো ছিল।

পুলিশের আশঙ্কা, ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তিনি হাইওয়ে পুলিশের সাভার এলাকার দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তিনি উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার আলিভুখা গ্রামে। রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ সহিদ আলম জানান, এএসপি মিজানুর রহমানের গলায় কালো দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তবে কী কারণে, কারা তাকে হত্যা করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। তার শরীরে একটি চেক শার্ট ছিল। প্যান্টটি ছিল পুলিশের ইউনিফর্ম। সঙ্গে থাকা ব্যাগে তার ব্যক্তিগত গাড়ির চাবিও পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগের ভিতরে পুলিশের ইউনিফর্মের শার্ট এবং দুটি মোবাইল পাওয়া গেছে। মোবাইলের সূত্র ধরে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা, তিনি অফিসে গিয়ে ইউনিফর্মের শার্ট পরেন। তার নামে অফিসিয়াল কোনো গাড়ি ইস্যু করা ছিল না। এ কারণে তিনি ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার নিয়ে অফিসে যেতেন। তবে প্রাইভেটকারটি তার বাড়ির গ্যারেজেই ছিল। কিন্তু গাড়ি ছাড়া তিনি কেন বের হলেন তার কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এএসপি মিজানুর রহমান সাহরি খেয়ে উত্তরার সেক্টর-৫, রোড-৩ এর ৩৮ নম্বর বাসা থেকে সাধারণ পোশাকে বের হয়েছিলেন। তার স্ত্রীর নাম শাহানা পারভিন। তাদের বড় মেয়ে সুমাইয়া উত্তরার একটি স্থানীয় কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে এবং ছোট ছেলে মুশফিক প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলছেন, মিজানুর রহমানের লাশ পাওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যদের জানানো হলেও তার স্ত্রী বা সন্তানের কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি। বিষয়টি সন্দেহজনক। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার কোনো ঝামেলা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের মিরপুর বিভাগের এডিসি কামাল হোসেন জানান, মিজানুর রহমানের মুখে ছুরির আঘাতের দুটি চিহ্ন রয়েছে। গলায় রুমাল পেঁচানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তাকে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার দুটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেলেও মানিব্যাগ পাওয়া যায়নি। পুলিশের হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম জানান, এএসপি মিজানুর রহমান এক বছর ধরে সাভারে কর্মরত আছেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর