শনিবার, ২৪ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

এক বছরেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কিশোরগঞ্জ

এক বছরেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ

কিশোরগঞ্জের চাঞ্চল্যকর শোলাকিয়া জঙ্গি হামলা মামলায় অভিযোগপত্র এক বছরেও দিতে পারেনি পুলিশ। মামলাটির তদন্ত এখনো শেষ হয়নি বলে জানা গেছে। এ মামলায় তিনজন আসামি জেলহাজতে রয়েছেন। এর মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন আসামি দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান জানান, আসামি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার মদদদাতা, অস্ত্রদাতা, অর্থদাতা ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের নাম-পরিচয় জানিয়েছেন রাজীব গান্ধী। তার দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে এরা কেউই কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা নয় বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান। দেশের বিভিন্ন স্থানে এরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। রাজীব গান্ধী গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম রাঘবপুর ভূতমারা গ্রামের মাওলানা ওসমান গনির ছেলে। তিনি নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান। রাজীব গান্ধী ছাড়াও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে আটক রয়েছেন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পান্থাপাড়া গ্রামের হাকিম উদ্দিন আকন্দের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন ও কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে জাহিদুল হক তানিম। এ দুজন শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার বিষয়ে স্বীকারোক্তি না দিলেও কারাগারে আটক রয়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলায় জড়িত তামিম চৌধুরী, মেজর জাহিদ, আকাশ, মারজানসহ অনেক আসামি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন। তারা সবাই শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত বছর ঈদুল ফিতরের দিন (৭ জুলাই) শোলাকিয়া ঈদগাহের পশ্চিম দিকে আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের কাছে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কনস্টেবল আনসারুল হক ও জহিরুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ দেবনাথের স্ত্রী গৃহবধূ ঝরনা রানী ভৌমিক ও আবির রহমান নামে এক জঙ্গি নিহত হন। নিহত জঙ্গি আবির কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার ত্রিবিদ্যা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সরকারের ছেলে। ঘটনার পর শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম নামে একজন আহত অবস্থায় র‍্যাবের হাতে এবং জাহিদুল হক তানিম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। শফিউল দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে এবং তানিম কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা এলাকার আবদুস সাত্তারের ছেলে। শফিউল বেশ কিছুদিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে তাকে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে নেওয়ার পথে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বড়াইগ্রামে এক সঙ্গীসহ র‍্যাবের সঙ্গে ক্রসফায়ারে নিহত হন। শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ব্যাপারে ঈদের দিন শোলাকিয়ায় ডিউটিরত পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে শফিউল ও তানিমসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর