মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

উত্তরায় তিন ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, দুই লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

উত্তরায় তিন ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, দুই লাশ উদ্ধার

আগুনে রাজধানীর উত্তরায় তিনটি ভবন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল ভোরে ৪ নম্বর সেক্টরে সি-শেল রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। পরে তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর উত্তরায় আবাসিক হোটেলসহ পাশাপাশি থাকা দুটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। গতকাল ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে দগ্ধ এক নারী ও এক পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। জানা গেছে, উত্তরা প্রধান সড়কের পাশে রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের বিপরীতে ৪ নম্বর সেক্টরে ‘সি-শেল’ রেস্তোরাঁর তিন তলায় প্রথমে আগুন লাগে। এরপর  তা ‘এ কে টাওয়ার’ ও পাশের ভবনের ‘একুশে রেস্তোরাঁ’য় ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, সি-শেল হোটেলের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা দুর্বল ছিল। দুই মাস আগে এ ব্যাপারে তাদের নোটিসও  দেওয়া হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া দুই লাশের পরিচয় সম্পর্কে উত্তরা পূর্ব থানার এসআই সুমন শিকদার জানান, একজনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার পরিচয় জানা গেছে। তার নাম রাসেল মিয়া। বয়স আনুমানিক ৩৫। তিনি ঢাকায় প্রাণ আরএফএল গ্রুপে চাকরি করতেন। চাঁদপুরের হাইমচরের নূর মোহাম্মদের ছেলে তিনি। ঢাকায় পল্লবীর একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। একই কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ২৫-৩০ বছর বয়সী নারীর লাশের পরিচয় তত্ক্ষণাৎ জানা যায়নি। উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিক জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সি-শেল আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে চতুর্থ তলার ৩০২ নম্বর কক্ষ থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের জানান, হোটেলের মালিক দাবি করেছিলেন ভিতরে কেউ আটকা নেই। তার পরও দুজনের লাশ পাওয়া গেছে। রেস্তোরাঁ কর্মচারীরা আগুন নেভানোর কোনো চেষ্টাও করেননি। পুলিশের খবরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। তার আগেই হোটেল কর্মচারীদের সবাই পালিয়ে যান। এ আগুনে সি-শেল হোটেল ও পার্টি সেন্টার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কে টাওয়ারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা গেছে, সি-শেল রেস্তোরাঁর মালিক আমানউল্লাহ আমান নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি পাশের ভবনের একটি অংশ ভাড়া নিয়ে আবাসিক এই হোটেল চালাচ্ছিলেন। আর ছয় তলা ওই ভবনটির মালিক উত্তরখান থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হানিফ। তার স্ত্রী ইসমে আরা হানিফ জানান, তাদের ভবনের চার থেকে ছয় তলা পর্যন্ত আমানউল্লাহর কাছে ভাড়া দেওয়া। তিনি সেখানে হোটেল চালাচ্ছিলেন। এ কে টাওয়ারের ব্যবস্থাপক আলাউদ্দিন জানান, খবর পাওয়ার পর তিনি এসে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভাতে দেখেন। কীভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কিছু জানেন না। অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা দুর্বলের বিষয়ে দুই মাস আগে ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া নোটিসের ব্যাপারে সি-শেল হোটেলের ব্যবস্থাপক সোহেল বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের নোটিস আমরা পাইনি। তবে আমরা প্রতিটি কক্ষে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা রেখেছিলাম। আর ফায়ার সার্ভিস দেরিতে আসার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর