শিরোনাম
শনিবার, ৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
রাজনীতির হালচাল

তৃণমূল চাঙ্গা করতে বিএনপির উদ্যোগ

মাহমুদ আজহার

তৃণমূল চাঙ্গা করতে বিএনপির উদ্যোগ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল চাঙ্গা করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বিএনপিতে। ঈদের আগে সাংগঠনিক সফরের পর এবার দেশজুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে দলটি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী এক কোটি সদস্য সংগ্রহের টার্গেট দেওয়া হলেও তা ছাড়িয়ে দেড় থেকে দুই কোটি করার সর্বাত্মক চেষ্টায় দায়িত্বশীল নেতারা। বিএনপির হাইকমান্ড মনে করছে, এর মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা মনোভাব ফিরে আসবে। এ অভিযানে আবারও কেন্দ্রীয় নেতারা যাবেন তৃণমূলে। সঙ্গে যাবেন সাবেক ছাত্রনেতারাও। এতে সদস্য ফরম বিক্রি করে দল পরিচালনায় আর্থিক সংকট কাটানোর চেষ্টাও করবে দলটি। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশান কার্যালয় পরিচালনার পাশাপাশি স্টাফদের বেতন-ভাতার ব্যয় নির্বাহ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রায় ৯ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। ৮ বছর পর সদস্য সংগ্রহ অভিযান করতে যাচ্ছে বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকবান্ধব দল। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। দেশের সাধারণ মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন বিএনপির প্রতি রয়েছে। কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। এত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বিএনপি অনেক বেশি শক্তিশালী ও চাঙ্গা। সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে দল আরও চাঙ্গা হবে বলে আমরা আশাবাদী।’ জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সদস্য সংগ্রহ অভিযান সামগ্রিকভাবে মনিটর করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে টাকা দিয়ে রসিদের মাধ্যমে সদস্য ফরম দেওয়া হচ্ছে। যারা পুরনো ছিলেন তাদের নবায়ন করা হচ্ছে। আবার নতুন করেও সদস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দলের মহাসচিব ছাড়াও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন ও বেলাল আহমেদ এ বিষয়টি দেখভাল করছেন। এ ছাড়াও বেগম জিয়া সাবেক কয়েকজন ছাত্রনেতাকেও সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সার্বিক খোঁজখবর রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা হলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য সামসুজ্জামান সুরুজ। এ ছাড়াও যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, ‘সারা দেশের জেলা-উপজেলা থেকেই নেতারা প্রতিটি ফরম ১০ টাকার বিনিময়ে রসিদ বই নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই যোগাযোগ করছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য নেতারাও রসিদ বই নিয়ে যাচ্ছেন।’ গতকাল পর্যন্ত ৪ লাখ সদস্য ফরম বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি। বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ তত্ত্বাবধানে এই সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এ বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। পরে সদস্যদের তালিকা নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ডাটাবেজ তৈরি করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বিএনপি প্রধান চলতি মাসের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে লন্ডন সফরে যেতে পারেন। সেখান থেকে ফিরে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন। এর মধ্যেই তিনি দলকে গুছিয়ে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে যান। সরকার বিএনপির দাবি না মানলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, দল চালাতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। এ কারণে সদস্য ফরম বিক্রি করে এই সুবিধা পেতে পারে। এক কোটি সদস্য ফরম বিক্রি করলে ১০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। আর এটা দলীয় ফান্ডে খরচ হবে। সম্ভব হলে দুই কোটি ফরম বিক্রির চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর