শিরোনাম
শনিবার, ৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অবশেষে কূটনীতিকদের গৃহকর্মী নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দেশের কাঁধে কলঙ্কের বোঝা চাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পরপর দুই বাংলাদেশি কূটনীতিক গ্রেফতার হওয়ার পর কূটনীতিকদের দেশ থেকে গৃহকর্মী নেওয়ার সুবিধা বন্ধ করেছে সরকার। আপাতত ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোয় নিযুক্ত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের দেশ থেকে গৃহকর্মী নেওয়ার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা বাংলাদেশের সব মিশনে পাঠানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, মিশনগুলোয় পাঠানো পররাষ্ট্র দফতরের বার্তায় বলা হয়, সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপাতত ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোয় গৃহকর্মী নেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নতুন এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয় করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্তায়। সেই সঙ্গে বার্তায় জানানো হয়, মিশনপ্রধানদের জন্য যে দেশে মিশন অবস্থিত সেই দেশের একজন বাবুর্চি স্থায়ীভাবে নিয়োগের প্রস্তাব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ প্রস্তাব এখন জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় আছে। এটি অনুমোদন হলে সংশ্লিষ্টরা সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জানা যায়, গত মাসে নিজের গৃহকর্মীর করা মামলায় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের উপ-কনসাল জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে মামলায় শ্রমিক পাচার, গৃহকর্মীকে নির্যাতন ও ভয় দেখিয়ে বিনা বেতনে কাজ করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এক দিন পর জামিনে মুক্তি পেলেও তার পাসপোর্ট বর্তমানে নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে জব্দ অবস্থায় আছে। পরে সরকার তাকে নিউইয়র্কের জাতিসংঘ মিশনে বদলি করে। কিন্তু আইনি জটিলতায় সেখানেও বিপত্তি বাধে। বাংলাদেশ এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে গেলেও তেমন কোনো লাভ হয়নি। মামলা চলা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রেই থাকতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাবেক এক এমপির ছেলে শাহেদুল ইসলামকে। তিনি তার বাবার দীর্ঘদিনের এক গৃহকর্মীর ছেলেকে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের লোক হিসেবে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে সেই গৃহকর্মী স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য পালিয়ে যান এবং তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দফতরে কর্মরত বাংলাদেশের আরেক কূটনীতিক হামিদ রশিদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও বেতন কম দেওয়ার অভিযোগ আনেন তার গৃহকর্মী। তাকেও গ্রেফতার হতে হয় স্থানীয় পুলিশের হাতে। একই ধরনের অভিযোগে ২০১৪ সালে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের তখনকার কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলার নোটিস আসার আগেই নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে আসতে পারায় সে যাত্রায় গ্রেফতার এড়াতে পারেন মনিরুল ইসলাম।

সর্বশেষ খবর