শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঘরে ঘরে গিয়ে মশা মারা সম্ভব নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘরে ঘরে গিয়ে মশা মারা সম্ভব নয়

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, নগরীর প্রত্যেকটি ঘরে গিয়ে মশা মারা সম্ভব নয়। কারণ বাসা-বাড়ির নিরাপত্তাজনিত কারণে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা সেখানে গিয়ে ফগিন মেশিন মারতে পারে না। আর চিকুনগুনিয়ার ব্যাপক প্রকোপে সিটি করপোরেশন এককভাবে দায়ী নয়। তিনি বলেন, একথা ঠিক চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে আমাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। এমনকি এটি নিয়ন্ত্রণেও জাতীয় কোনো নির্দেশিকা নেই। তবে আগামীতে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে প্রস্তুতির একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হবে। মনে করা হয় চিকুনগুনিয়া প্রকোপের জন্য সিটি করপোরেশন দায়ী, কিন্তু আসলে তা না। গতকাল গুলশান-২ এ উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেয়র। এ সময় তিনি রাজধানীতে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ ব্যাপক আকার ধারণ করায় দুঃখ ও আক্রান্তদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়াও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আজ শনিবার বেলা ১১টায় নগর ভবন থেকে চিকুনগুনিয়া বিষয়ে সচেতনতামূলক এক র‌্যালি বের করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে মেয়র আনিসুল হক বলেন, অনেকেই অনেকভাবে সিটি করপোরেশনকে দায়ী করছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে- এডিস মশা নগরীর ময়লা পানি, আবর্জনা, ময়লা জলাশয় বা ড্রেনে জন্ম নেয় না। এডিস মশা জন্ম নেয় বাসার ফ্রিজের ট্রেতে জমানো পানি, এসি, সানসেট, ফুলের টব ও ছাদে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে। এ ছাড়া বাড়ির আশপাশে পড়ে থাকা ভাঙা হাঁড়ি, ক্যান, পরিত্যক্ত টায়ার এবং নির্মাণাধীন ভবনের চৌবাচ্চা, বালতি, ড্রাম ইত্যাদিতে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতেও জন্মে। তাই এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের পাশাপাশি নগরবাসীকে আরও সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে একা চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, এ জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, চিকুনগুনিয়া ২০১৬ সালে দিল্লিতে মহামারীর রূপ নেয়। এরপর করাচি ও শ্রীলঙ্কাতেও এ সমস্যা রয়েছে। শ্রীলঙ্কায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮ হাজার। বাংলাদেশে এর আগে চিকুনগুনিয়ার প্রদুর্ভাব কখনোই দেখা যায়নি। তাই আমাদের কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। ২০০৮ সালে রাজশাহীর পবা উপজেলায় ৩২ জন রোগী পাওয়া যায় এবং ২০১১ সালে ঢাকার দোহারে কিছু রোগী পাওয়া যায়। এ বছরই প্রথম আমাদের দেশে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। তাই আগামীতে যেন এর প্রভাব আর না বাড়ে সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় সেখানে তিনজন বিশেষজ্ঞ এপিডেমিওলজিস্ট মাহমুদুর রহমান, এন্টোমলজিস্ট তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ ও  মুনজুর এ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রত্যেকই দেশে চিকুনগুনিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিকে মহামারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাউল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম এম সালেহ ভূঁইয়া, প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা কমোডর আবদুর রাজ্জাক।

সর্বশেষ খবর