মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিরপেক্ষভাবে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে

ছহুল হোসাইন

নিরপেক্ষভাবে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে

নিরপেক্ষতার সঙ্গে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম ছহুল হোসাইন। তিনি বলেন, ‘নতুন রোডম্যাপ ঘোষণাকে আমি স্বাগত জানাই। এ রোডম্যাপই নির্বাচনকে “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড” তৈরি করার মূল ভিত্তি দেবে। নিরপেক্ষতার সঙ্গে, একনিষ্ঠতার সঙ্গে তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে তারা যাবেন নির্বাচনের দিকে। নির্বাচনকালীন সম্পূর্ণ দায়িত্ব তাদের হাতে থাকবে। ওই চ্যালেঞ্জ নিরপেক্ষ ও একনিষ্ঠভাবে তাদের মোকাবিলা করতে হবে।’ নতুন নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ কথা বলেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। ছহুল হোসাইন বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন কখন কী করবে তার একটি নকশা ঘোষণা করেছে। এটা রুটিনওয়ার্ক হলেও অনেক চ্যালেঞ্জের। সুষ্ঠুভাবে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা যে কত কঠিন, তা যারা প্রণয়ন করেন তারাই বোঝেন। আমরা ভোটার তালিকা করতে গিয়ে দেখেছিলাম, ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার। আমাদের দেশে একটা সংস্কৃতি হয়ে গেছে ভুয়া ভোটার বানানো। এগুলো উত্খাত করে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। পরিচ্ছন্ন বললাম এজন্য, যাতে ছবিগুলো সুন্দর আসে। কিছু লোক পয়সা দিয়ে চায়, ছবি যাতে স্পষ্ট না আসে, জনগণ যাতে বুঝতে না পারে। আর এ কাজ করতে গিয়ে যেন বেশি লোক না হয়। নতুন ভোটারদের যেন কেউ বাদ না পড়ে। যারা মারা গেছেন, তাদের যেন বাদ দেওয়া হয়। এটা সহজ কাজ নয়। সব বাড়ি বাড়ি যেতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, এটা রুটিন কাজ। আমি বলি, এ কাজ কি দায়িত্বহীনভাবে করা যাবে? একইভাবে সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেকেই প্রভাবিত করে নিজেদের মতো করে সীমানা নির্ধারণ করতে চান। আরেকজন চান এক সীমানা আরেক সীমানার মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে। যার যার সুবিধামতো সীমানা চান। এও একটা চ্যালেঞ্জ। এও যত্নের সঙ্গে, সতর্কতার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে করতে হবে। এ নিয়ে শুনানিও হয়। আমরাও ৩০০ অভিযোগ পেয়েছিলাম। এরপর সেগুলো সমাধান করেছি অনেক কষ্টে। এগুলো রুটিন হলেও কষ্টকর। আর আমি যদি বলে দিই, ওইদিন এটা হবে, ওইদিন সেটা হবে তাও ঠিক নয়। নির্বাচন কমিশনকে একটি জবাবদিহিমূলক অবস্থানে থাকতেই এ রোডম্যাপ।’ সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনে বিরোধী দলের কিছু দাবি রয়েছে। এগুলো রাজনৈতিক। এগুলো সমাধান করতে হবে সরকারকে। সেখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। যেমন সহায়ক সরকার। এটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বও নয়। এটা বাস্তবায়ন করতে হবে সরকারকেই।’

নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে ছহুল হোসাইন বলেন, ‘নির্বাচন কশিনের হাতে প্রশাসনিক দায়িত্ব আসার পর তারা সুনির্দিষ্ট করে দেবে, কোন এলাকায় কারা দায়িত্ব পালন করবে। সামরিক বাহিনীর লোকজন কাজ করবে, বসে থাকবে না। আমরা সব সময় তাদের টহলে রেখেছিলাম। সময় বেঁধে দিয়েছিলাম, কোন এলাকায় কারা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে। তাদের সঙ্গে থাকবেন ম্যাজিস্ট্রেট। এগুলো নির্বাচনকালীন কথা। যখন যেখানে যা দরকার, তাই করতে হবে।’ ছহুল হোসাইন আরও বলেন, ‘আমরা এখন পর্যবেক্ষণ করছি। এ রোডম্যাপ কত নিরপেক্ষতার সঙ্গে, সততার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে তারা বাস্তবায়ন করছেন, তা সবাই দেখছে। রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমি মনে করছি।’

সর্বশেষ খবর