শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে আটক

অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমানকে দেশে ফেরত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমানকে দেশে ফেরত

আলোচিত-সমালোচিত মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে দেয়নি সে দেশের অভিবাসন পুলিশ। গতকাল ভোরে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে কুয়ালালামপুরে পৌঁছানোর পর অভিবাসন পুলিশ তাকে সেখানে আটকে রাখে। এরপর গত রাতে ওই উড়োজাহাজ সংস্থার ফিরতি ফ্লাইটে তাকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়। অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়ে  বলেন, অ্যান্টি- ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এপিডিএন) আয়োজিত মৃত্যুদণ্ড রহিত করার বিষয়ে দুই দিনের এক সেমিনারে যোগ দিতে গতকাল ভোরে মালয়েশিয়ায় পৌঁছান আদিলুর রহমান খান। আজ থেকে ওই সেমিনার শুরু হচ্ছে।

এর আগে গত জুন মাসে হান হুই হুই নামের সিঙ্গাপুরের এক মানবাধিকার কর্মীকে একইভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। কনফারেন্স উপলক্ষে মালয়েশিয়া যাওয়া সিঙ্গাপুরের হান হুই হুইকে ভয়ঙ্কর অপরাধী হিসেবেও চিহ্নিত করেছিল কুয়ালালামপুরের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। তবে আদিলুর রহমান খানের বিষয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য  দেয়নি মালয়েশিয়ার অভিবাসন। আদিলুর রহমানের মালয়েশিয়ায় আটক হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্টারপোলের ঢাকা অফিস ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, আমার জানা মতে, আদিলুর রহমান খানকে আটকের ব্যাপারে ইন্টারপোলের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো অনুরোধ নেই। তবে ঢাকায় দায়িত্ব পালনরত দক্ষিণ এশিয়ার এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, প্রত্যেক দেশই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে যে কোনো ব্যক্তির প্রবেশাধিকার লোপ করার অধিকার সংরক্ষণ করে। সেই হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা তালিকা বিমানবন্দরে রাখার প্রচলন আছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদিলুর রহমান খান বাংলাদেশেও বিচারাধীন আছেন। ২০১৩ সালের ৫ মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় বাংলাদেশে আদিলুর রহমান খানের বিচার চলছে। হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে সময় যে অভিযান চালায়, তাতে ৬১ জন নিহত হয় বলে অধিকারের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। অধিকারের কাছে ‘নিহতদের’ নাম-পরিচয় চেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হলেও অধিকার তথ্য দিতে অস্বীকার করে। মতিঝিলে হেফাজতবিরোধী অভিযান নিয়ে তথ্য বিকৃতি, অসত্য তথ্য উপস্থাপন, ফটোশপের মাধ্যমে ছবি বিকৃত করে অধিকারের প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা এবং জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখানোর মতো অভিযোগ আনা হয় মামলার আসামি আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে বেশ কিছুদিন কারাগারে থাকলেও পরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান আদিলুর রহমান খান।

সর্বশেষ খবর