সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
৩১ জুলাই সংলাপ শুরু ইসির

আমন্ত্রণ পাচ্ছেন সুশীল সমাজের ৬০ প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ৩১ জুলাই সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য সুশীল সমাজের ৬০ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আজ তাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হবে। সংলাপে পরামর্শ দেওয়ার সুবিধার্থে আমন্ত্রণপত্রের সঙ্গে নির্বাচনের ম্যানুয়েল (আইন ও বিধিমালার সংকলন), গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, নির্বাচনের বিভিন্ন বিধিমালা পাঠানো হয়েছে। কমিশন আশা করছে, এসব আইন ও বিধিমালা যুগোপযোগী এবং নির্বাচন ব্যবস্থা আরও গ্রহণযোগ্য করতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেবেন। ওই সব মতামতের মধ্যে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ তা আমলে নেবে কমিশন। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইন ও বিধিমালা সংশোধন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, পর্যবেক্ষক, নারীনেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে ইসি। এরই অংশ হিসেবে ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রথমে বৈঠকে বসবে কমিশন। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে এ সংলাপ। জানা গেছে, সুশীল সমাজের ৬০ প্রতিনিধির মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন বিশ্লেষকদের নাম রয়েছে।

সংলাপের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বিদায়ী সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা সুশীল সমাজের ৬০ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ (ডিও) জানিয়েছি। তবে কমিশন সিদ্ধান্ত দিলে আমন্ত্রিতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’ তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা ১৬ জুলাই প্রকাশ করেছে নির্বাচন ইসি। এতে সাতটি কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে সংলাপ। আমরা কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করেছি। এ সংলাপের উদ্দেশ্য হচ্ছে কীভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করা যায়।’ সংলাপে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ, কলামিস্ট, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, সিভিল সার্ভিসের প্রবীণ ব্যক্তি, সাবেক রাষ্ট্রদূত, সাবেক সচিবসহ যারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করেছেন তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’

সংলাপের এজেন্ডায় কী থাকছে সে বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, কর্মপরিকল্পনায় যে সাতটি বিষয় রয়েছে, এর মধ্যে সংলাপ ছাড়া বাকি ছয়টি বিষয়ে তাদের মতামত নেওয়া হবে। সংলাপে উঠে আসা মতামত কমিশন আমলে নেবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সংলাপে যেসব পরামর্শ আসবে সেগুলো নোট আকারে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। ওই প্রতিবেদন থেকে যেসব পরামর্শ বা প্রস্তাব গ্রহণ করার মতো, সেগুলো আমলে নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের সময় নির্ধারণ করা হয়নি।

আসন্ন রংপুর সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না—এমন প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, ‘বিভিন্ন সিটিতে ব্যবহৃত ইভিএম রংপুর সিটিতে ভোট গ্রহণে ব্যবহার করা হবে না।

নতুন পদ্ধতির ডিজিটাল ভোটিং মেশিন ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাই করছি। আশা করছি, এক বা একাধিক ওয়ার্ডে এটি ব্যবহার করব।’ তিনি জানান, এর সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে না। তবে অন্যান্য বিষয়, যেমন কন্ট্রোল ইউনিটসহ অন্য সব উপকরণ থাকবে। এ পদ্ধতিতে হাতের আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া হলেই ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রজেক্টরে ভেসে আসবে। বুথে থাকা এজেন্টসহ সবাই অনুমোদন দিলে তার ভোট নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে জাতীয় নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্বায়নের যুগে সবাই এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে তাল মেলাতে নির্বাচন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। কেন্দ্রে গিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দেওয়ার সনাতন পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের ১৭৬টি দেশে আমাদের নাগরিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ভবিষ্যতে নির্বাচন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করতে পারলে বিদেশে থাকা নাগরিকেরা সেখানে বসেই ভোট দিতে পারবেন। তবে এটা পাঁচ-দশ বছরের পর। অর্থাৎ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।’

সর্বশেষ খবর