বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফের পাহাড়ধসে নিহত ৪

লামায় বিভিন্ন স্থানে ধস, বান্দরবান বিচ্ছিন্ন

কক্সবাজার প্রতিনিধি

ফের পাহাড়ধসে নিহত ৪

কক্সবাজার শহরে পাহাড়ধসে চাপা পড়া কয়েকজন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

কক্সবাজার শহর ও রামুতে পাহাড়ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতাবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে চারজনকে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে কক্সবাজার শহরের লাইট হাউস ও রামু উপজেলার মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক আবদুল মালেক জানান, ‘চেইন্দায় পাহাড়ধসের ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় একই পরিবারের সায়মা (৫) ও জিহান (৭) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মাটিচাপা পড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে তাদের বাবা জিয়াউর রহমান (৩৫) ও মা আনারকলিকে (২৯)। এ দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে কক্সবাজার শহরের লাইট হাউস এলাকায় আরেক পাহাড়ধসের ঘটনায় মোহাম্মদ শাহেদ (১৮) ও সাদ্দাম হোসেনের (২৮) মৃত্যু হয়। এ সময় দেলোয়ার হোসেন (২৫) ও আরাফাত হোসেনকে (৩০) আহতাবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর থেকে কক্সবাজারে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাত হবে এবং পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।

লামায় অর্ধশত স্থানে পাহাড় ধস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন : লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি জানান, টানা ৭ দিনের ভারী বর্ষণে লামা উপজেলার প্রায় অর্ধ শতাধিক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। লামা-চকরিয়া সড়কের মিরিঞ্জা এলাকায় সোমবার দিবাগত রাতে পাহাড় ভেঙে সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে পাহাড় চাপা পড়ে বসতবাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষ পড়েছে চরম কষ্টে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সব কিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বা অন্য কারো ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কাছে পৌঁছায়নি সরকারি বেসরকারি কোনো সহায়তা। এমনকি পাহাড় ধসের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কোনো তালিকা নেই উপজেলা প্রশাসনের। লামা পৌরসভার চেয়ারম্যান পাড়া এলাকার খোরশেদ আলম (৫৫) বলেন, গতরাত ১টায় আমার বাড়ির উপর পাহাড় ভেঙে পড়ে। প্রায় ৭০০ ফুট উপর থেকে পাহাড় ভেঙে ঘরে পড়ে। সতর্ক থাকায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করেন।

নিখোঁজ মুন্নির লাশ মিলল বাঁশখালীতে : নিজস্ব প্রতিবেদক, (বান্দরবান) জানান, বান্দরবানের রুমা উপজেলার সড়ক পথে পাহাড় ধসের ঘটনায় নিখোঁজ মুন্নি বড়ুয়ার লাশ বাঁশখালীর সাঙ্গু নদীতে মিলেছে। উপজেলার দলিয়ান পাড়া এলাকায় গত রবিবার সড়কের উপর পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে নিখোঁজ ৪ জনের মধ্যে অন্য তিনজনের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। মুন্নি বড়ুয়া রুমা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাঙ্গু নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় মুন্নি লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে লাশটি হস্তান্তর করলে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশের ধারণা— মুন্নির লাশ ঘটনাস্থলের সঙ্গে লাগোয়া পাহাড়ি ঝিরির স্রোতে ভেসে অদূরে সাংগু নদীতে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে লাশটি ভাসতে ভাসতে বাঁশখালীতে চলে যায়। প্রসঙ্গত, পাহাড় ধসের ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে স্কুলছাত্রী  সিংমেচিং, কৃষি ব্যাংক রুমা শাখার কর্মকর্তা গৌতম কুমার নন্দী ও রুমা ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মোহাম্মদ রবিউল।

সর্বশেষ খবর