বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতা নিরসন অত সহজ নয়

প্রতিদিন ডেস্ক

জলাবদ্ধতা নিরসন অত সহজ নয়

দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে এক সাক্ষাৎকারে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন অত সহজ নয়। কেউ যদি বাইরে থেকে সহজ মনে করেন, তাহলে হবে না।’ চলতি মৌসুমে ভারি বর্ষণ হলেই ডুবছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা। সম্প্রতি হাঁটুপানিতে জলমগ্ন নগরী দেখতে বেরিয়েছিলেন তিনি। সোমবার রাতে নগর ভবনে যখন মেয়র নাছির সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, তখনো নগরীর অনেক এলাকা ছিল জলমগ্ন। এ কারণে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে নিজের বুধবারের কর্মসূচিও পিছিয়ে দিতে হয়েছে তাকে। খবর বিডিনিউজের। দুই বছরে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও নিজেকে এখনই ব্যর্থ মানতে নারাজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা নাছির। এই ক্রীড়া সংগঠক বলেন, ‘আমার দায়িত্ব এখনো শেষ হয়নি। এখনো আমি খেলছি। খেলা শেষ হওয়ার আগে তো আপনি (ব্যর্থ) বলতে পারেন না।’ চট্টগ্রামে জলে তলিয়ে যাওয়া সড়কে এ বছর নৌকা চলতেও দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতির বিষয়ে নাছির বলেন, ‘নির্বাচনে ভোটারের মন জয় করতে হয়। যে সমস্যা তখন ছিল তার নিরিখে প্রচারণা চালানো হয়েছিল। তখন জলাবদ্ধতা ছিল প্রকট।’ জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নগরবাসীরও দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন মেয়র নাছির। ‘খাল-নালা দখল ও ভরাট হলে কারও পক্ষেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নেও নগরবাসীকে সহায়তা করতে হবে।’

নিজের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে নাছির বলেন, ‘সামর্থ্যের মধ্যে নিয়মিত খাল খনন করছি। আবার ভরাট হচ্ছে। পরিকল্পিত কোনো ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা নেই।’ সিটি করপোরেশন একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিডিএও কাজ করছে। সব সমন্বয় করে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব।’ সড়ক পাকাকরণ ও আলোকায়নের আওতা বাড়ানো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং আবর্জনা দ্রুত অপসারণকে নিজের সাফল্য বলে দাবি করেন নাছির। ‘আমি ব্যাপকভাবে মানুষের সঙ্গে মিশি। মানুষ আমার প্রতি এখনো আস্থা রেখেছে। আমি বলব, আস্থা আরও বেড়েছে। গত নির্বাচনে যারা আমাকে ভোট দেননি এখন নির্বাচন হলে তারা ভোট দেবেন, এটা আমার বিশ্বাস।’ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত এম মনজুর আলমকে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫২৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন নাছির। ওই বছরের ৬ মে শপথ নিলেও বিদায়ী মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ না হওয়ায় মেয়র হিসেবে তিনি আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেন ২৬ জুলাই। দায়িত্ব গ্রহণের পর সিসিসির পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়ে দেখি সচিব, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও প্রধান প্রকৌশলী নেই।’ ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারস্পরিক মামলা ও করপোরেশনের বিরুদ্ধে মামলা ছিল। তখন শৃঙ্খলা ফেরানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এখন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছি।’ অন্য মেয়রদের মতো প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা না পাওয়ায় ‘অভিমান’ আছে কিনা— জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘তৃণমূল থেকে প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য হয়ে এখানে এসেছি।’ ‘পাওয়ার জন্য নয় দেওয়ার জন্য রাজনীতি করি। অভিমান বা কষ্টের কিছু নেই। যতটুকু সেবা দিতে চাই তা না পারলে সেটাই হবে কষ্টের।’ নাছির আশা করেন, তার মেয়াদের বাকি তিন বছর সময়ে সিটি করপোরেশনের সেবা কার্যক্রম ‘জনসন্তুষ্টির’ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর