শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
মানবতাবিরোধী অপরাধ

ওসমান ফারুকের তদন্ত, শমসের মুসার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওসমান ফারুকের তদন্ত, শমসের মুসার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া একই অভিযোগে বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্থার সদস্য এম সানাউল হক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা আছে, তদন্ত চলছে। এ ছাড়া মুসা বিন শমসেরের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অগ্রগতি পেলে জানানো হবে।’

তদন্ত সংস্থার সূত্রমতে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ওসমান ফারুকসহ  ১১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করে স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। সেখানে একটি টর্চার সেলও ছিল। ওই তালিকা অনুসারে তদন্ত হচ্ছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য ওসমান গনির ছেলে ওসমান ফারুক মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচার ইকোনমি অনুষদের রিডার ছিলেন। অন্য ১০ জনও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কর্মকর্তা ছিলেন। ওসমান ফারুক ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর বিভিন্ন পর্যায় থেকে মুসা বিন শমসেরের বিচারের দাবি ওঠে। মুসা বিন শমসের ১৯৭০ ও ’৮০-এর দশকে আন্তর্জাতিকভাবে অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফরিদপুরের সাধারণ একটি পরিবার থেকে রহস্যময়ভাবে ধনাঢ্য হয়ে ওঠা মুসাকে তার এলাকার মানুষ ‘নুলা মুসা’ নামেই চেনে। অভিযোগ আছে, একাত্তরের ২১ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাদের ফরিদপুরে ঢোকার ক্ষেত্রে মানচিত্র ও পথ নির্দেশনা দিয়ে নেপথ্যে সহযোগিতা করেন তিনি।

১৬ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহ, শেরপুর, যশোর ও নড়াইলের ১৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে তদন্ত সংস্থা। গতকাল তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তদন্তের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সংস্থার জ্যেষ্ঠ সদস্য সমন্বয়ক এম সানাউল হক। তিনি বলেন, ‘দুটি আলাদা প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক শ্রম আদায়, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলের চার আসামির মধ্যে তিনজনই কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন শেরপুরের নকলা উপজেলার ইশিবপুরের মৃত সামসুজ্জামানের ছেলে এস এম আমিনুজ্জামান ফারুক, ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার বয়েলকান্দির আজিজুর রহমানের ছেলে এ কে এম আকরাম হোসেন, কুর্শা বাদগৈড়ের মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে মো. এমদাদুল হক ওরফে খাজা ডাক্তার। একজন পলাতক। যশোর ও নড়াইলের ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজন কারাগারে। তারা হলেন যশোর কোতোয়ালি থানার শংকরপুরের আমিন উদ্দিন মোল্লার ছেলে ওহাব মোল্লা, নড়াইলের বড়শুলা এলাকার রোকন উদ্দিন শেখের ছেলে ওমর আলী, তুলারামের আবদুর রহমানের ছেলে বদরুদ্দোজা, লোহাগড়ার নওয়াগ্রামের নবীর শেখের ছেলে দাউদ শেখ ও নড়াইলের শেখহাটির রবিউল হোসেন খানের ছেলে গুলজার হোসেন খান। অন্যরা পলাতক।

সর্বশেষ খবর