মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সংলাপের বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করব

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংলাপের বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করব

কে এম নূরুল হুদা

সবার সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা পরামর্শ নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবার সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া সুপারিশগুলো সরকার, রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সুশীলসমাজ ইসিকে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে বলেও সিইসি উল্লেখ করেন। ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারাবাহিক আলোচনা হবে। সবার বক্তব্য শুনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করব। সেখান থেকে যেসব উপাদান সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করা প্রয়োজন, সেগুলো আমরা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেগুলো চিন্তা করব। তাদের (সুশীলসমাজ) আমরা আশ্বস্ত করেছি, আইনের আলোকে নির্বাচন পরিচালনার যে ক্ষমতা ইসির সাংবিধানিকভাবে রয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে প্রয়োগ করা হবে।’ সিইসি জানান, সুশীলসমাজের সঙ্গে সংলাপে ভোটে সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে যেমন অনেকে দাবি তুলেছেন, তেমন সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেশিয়াল ক্ষমতা দিলে পুলিশ, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যদের ক্ষমতা খর্ব হবে বলেও মত দিয়েছেন। অনেকে ‘না’ ভোট চালুসহ নানা ধরনের সুপারিশ তুলে ধরেছেন। সিইসি জানান, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা সবচেয়ে বেশি পরামর্শ দিয়েছেন কমিশনকে ‘সাহসিকতার’ সঙ্গে কাজ করার। জনগণের আস্থা অর্জনের তাগিদ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে সংলাপ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত কমিশনের সব কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে করা হয়েছে। বলা যায়, আস্থা অর্জনের কাজগুলো কমিশন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ইসি একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। সেখানে সরকারে কারা থাকবে বা কারা থাকবে না তা মুখ্য বিষয়ের চেয়েও বড় কথা হলো, কঠোরভাবে, কঠিনভাবে এ নির্বাচন পরিচালনা আমাদের করতে হবে। জাতি আমাদের কাছে প্রত্যাশা করে সুষ্ঠু, ভালো নির্বাচন। আমরা যেন তা করতে পারি, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা তা মনে করে দিয়েছেন।’ সংলাপের মাধ্যমে সরকার ও রাজনৈতিক দলে প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সিইসি। তবে সংলাপের সুপারিশ নিয়ে সরকার চাপে থাকবে কিনা, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে অনেকে বলেছেন, এসব ইসির এখতিয়ারভুক্ত নয়। সরকার গঠন করা বা কেয়ারটেকার গঠনে কোনটা ইসির এখতিয়ারে রয়েছে, কোনটা নেই তারা বিজ্ঞ ব্যক্তি, তারা জানেনও। তবে সবার কথা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে সরকারের কাছে পাঠাব, এমনকি রাজনৈতিক দলের কাছেও পাঠাব। তারা দেখুক, এ দেশের নাগরিক যারা রয়েছেন তাদের ভাবনা কী; সংবিধানের আলোকে আমাদের যদি আরও স্বাধীনতা দেওয়ার থাকে সে ক্ষেত্রগুলোকে অ্যাড্রেস করা উচিত।’ সংলাপ বিএনপিকে আস্থায় কিংবা সরকারকে চাপে রাখবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘এটা বলতে পারব না। আমার তো মনে হয়, সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছবে সুশীলসমাজ কী ভাবে; যারা বিরোধী দলে বা সংসদের বাইরে রয়েছে তাদের কাছেও তা পৌঁছে যাবে। আমার মনে হয়, এতে তারা একটা সমঝোতায় আসতে পারবে। ধারণা করি এর মাধ্যমে একটা প্রভাব পড়বে; তবে বাধ্য করতে (সুশীলসমাজের চাওয়া বাস্তবায়ন) পারব কিনা জানি না।’

সর্বশেষ খবর