বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

রব-মান্নাদের বিকল্প জোটে জাপাকে টানার চেষ্টা

বি চৌধুরীর বাসায় বৈঠকে জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রব-মান্নাদের বিকল্প জোটে জাপাকে টানার চেষ্টা

বি চৌধুরীর বাসায় গতকাল বৈঠকে নেতারা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিকল্প রাজনৈতিক জোটে জাতীয় পার্টিকে (এরশাদ) নেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন বিকল্প জোট গঠনের চেষ্টা চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বি চৌধুরীর বারিধারার বাসভবনে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে ডাকা হয়েছে। রাত ৯টা থেকে টানা সাড়ে ৩ ঘণ্টা বৈঠকের পাশাপাশি নৈশভোজেরও আয়োজন করা হয়। বৈঠকে নতুন জোট গঠনের নানা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়। তবে আরও কয়েক দফা বৈঠক করে নির্বাচনের আগমুহূর্তে এ জোট হতে পারে।

এদিকে বৈঠকে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে সমন্বয়ক করে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়। আসন্ন নতুন জোটের কমিটিতে সব দলের প্রতিনিধিই সদস্য হবেন। প্রতি সপ্তাহে একটি করে বৈঠক করারও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠকসূত্রে জানা গেছে। বি চৌধুরীর নেতৃত্বে বৈঠকে রব-মান্না ছাড়াও যোগ দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী, আ স ম রবের স্ত্রী তানিয়া রব ও তার ছেলে।

বৈঠকে অংশ নিয়ে জি এম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী ও তার ছেলে মাহি বি চৌধুরী আমাকে ডিনারের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উনার সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি। তবে আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই কিছু কথা আসে। এখানেও সবাই মিলে কিছু রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা করেছি।’

অন্য পার্টির প্রতিনিধিরা থাকবেন জানতেন কিনা— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সবাই থাকবেন তা জানতাম না। দু-এক জন থাকবেন, তাই জানতাম। সাবেক একজন রাষ্ট্রপতি ডেকেছেন তাই এসেছি। এখানে রাজনৈতিক নেতারা অনেকেই এসেছেন। তাদের মতামত জানলাম। আমি বিষয়টি আমাদের দলীয় ফোরামে বা শীর্ষ নেতাকে জানাব।’ জাতীয় পার্টি নতুন কোনো জোট করবে কিনা— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। এখানে অফিশিয়াল বা আন-অফিশিয়াল যে আলাপ হয়েছে তা আমার নেতাকে জানাব। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।’ বৈঠক প্রসঙ্গে বি চৌধুরী বলেন, ‘দেশকে যারা ভালোবাসেন, তারাই দেশকে নিয়ে কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। এ নিয়েই আমরা কথাবার্তা বলেছি। অত্যাচার, জুলুম অনেক কিছুই হবে, এও স্বাভাবিক। আমরা দেশকে নিয়ে ভাবী, চিন্তা করি আরেকটু কীভাবে ভালো করা যায়। তবে আলোচনা ২-১ ঘণ্টায় শেষ হয়ে যাবে না, আরও সময় লাগবে। সবাই মিলে কীভাবে দেশকে গঠন করা যায়, সেই চিন্তা করছি। দেশের মানুষের কথা বলার সুযোগ করে দিতে হবে। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। এজন্য সর্বোচ্চ পন্থা কী হবে, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। কাজটি করতে দিন।’

আরও দু-এক জন শীর্ষ নেতা বৈঠকে অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের শরীর ভালো নেই। বিদেশ থেকে এসেছেন, তাই আসতে পারেননি। তার প্রতিনিধি রয়েছেন। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল থেকে আসতে পারেননি। মাহির দাওয়াতে অনেকেই এসেছেন।’ আ স ম রব বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে একটি করে বৈঠক করার চিন্তাভাবনা চলছে। এজন্যই মূলত লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না। তবে নতুন কিছু করতে চাই। জি এম কাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা আমাদের চিন্তাভাবনা শেয়ার করেছি। জাপা এখন তাদের সিদ্ধান্ত নেবে।’ প্রসঙ্গত, এর আগে ১৩ জুলাই রাতে আ স ম রবের উত্তরার বাসায় বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, মান্না, সুব্রত চৌধুরীরা এক হয়েছিলেন, যাতে বাগড়া দিয়েছিল পুলিশ।

সর্বশেষ খবর