নতুন নতুন আইন ও অপরাধের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে বিচারপতি এবং আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেন, আমরা বেশিরভাগ বিচারপতি নিয়োগ করি আইনজীবীদের মধ্য থেকে। আইনজীবীদের যদি ভালো প্রশিক্ষণ না থাকে তবে ভালো বিচারপতিও পাব না। তাই দক্ষ বিচারক তৈরি করতে একটা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট করা দরকার। সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদ হোসেনের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল এক আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেনের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জমির বক্তৃতা করেন। বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদ হোসেন স্মৃতি সংসদে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবীরা আজ দ্বিধাবিভক্ত। এভাবে চললে আইনের শাসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচারককে ভালো রায় লিখতে আইনজীবীরা সাহায্য করবেন। কিন্তু সেই রকম আইনজীবী দিনদিন কমে যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে আইনজীবীদের পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও গরিব অসহায় মানুষকে সহযোগিতায় আপনারা আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হোন। এই সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে হলে কিছু সময় দিয়ে গরিব ও অসহায় মানুষের মামলাও পরিচালনা করতে হবে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ৮ম সংশোধনীর মামলায় আমরা দেখেছি দলমত নির্বিশেষে গোটা আইনজীবী সমাজ আইনের শাসন রক্ষায় একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আজ আমরা সেই ভূমিকার কথা ভুলে যাচ্ছি। আমরা আইনের শাসনের কথা ভুলে যাচ্ছি। তিনি বলেন, লর্ড ডেনিংয়ের মতো বিচারপতিরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দুইশ বা আড়াইশ বছর আগে যে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন, একবিংশ শতাব্দীতে এসে আজ আমরা সে সাহস দেখাতে পারছি না। আজ সারা পৃথিবীতে উগ্রবাদ, ক্ষমতার লড়াই, ব্যবসা, টাকার পাহাড় গড়ায় ব্যস্ত। কেউ নিজের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নই।