আগামীতে কোনো কিছুতেই জনগণকে আর খালি মাঠে গোল খাওয়ানো যবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন মানেই কিন্তু লোক দেখানো কোনো অনুষ্ঠান নয়। বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে সবারই প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ ভালোভাবেই বুঝেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কী? মনে রাখতে হবে, এদেশের মানুষই গণতন্ত্রের জন্যই জীবন দিয়েছে। তারা জীবন দিতেও জানে। তাদের কখনোই গোল খাওয়ানো সম্ভব নয়। আগামীতেও এ চেষ্টা সফল হবে না।’ গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে এ কথা বলেন দেশের অন্যতম এই সংবিধান প্রণেতা। সংবিধানে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায়কে ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী বলেও আখ্যা দেন প্রবীণ এই আইনজীবী। তার মতে, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালত ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। গণমাধ্যমে যা এসেছে তা পড়েছি। এতে মনে হয়েছে, এ রায় যুগান্তকারী। এতে দেশ ও রাষ্ট্রের একটি চিত্র ফুটে উঠেছে।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ যেভাবে শক্তি সঞ্চয় করে যাচ্ছে, তাতে পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সরকার যেভাবে জনগণকে বঞ্চিত করছিল তাতে সুপ্রিম কোর্ট সমর্থন দেয়নি। নতুন জোট এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে আমিও চাই, সংবিধানকে সমুন্নত রেখে গণতন্ত্রকে কার্যকর করতে। এক্ষেত্রেও শুধু দুই দলই নয়, নতুন দল বা জোটও ভূমিকা পালন করতে পারে।’ বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসভবনে কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠককে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন তিনি। ড. কামাল বলেন, ‘সেখানে আমার দলেরও একজন প্রতিনিধি ছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা চলতেই থাকবে। জনগণকে সামনে রেখেই আমাদের এ তৎপরতা চলবে। জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য সংবিধানের আলোকে আমাদের যা করার করে যেতে হবে।’ ড. কামাল বলেন, ‘আমি মনে করি, এ দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। তারা এখন জানমালের নিরাপত্তা চায়, আইনের শাসন চায়। তারা চায় দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রেই ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা দেখতে চায়। এ নিয়ে দেশবাসীর ও অন্য কারও কোনো দ্বিমত নেই। এই ঐক্য জনগণের।’ দেশের অন্যতম এই সংবিধান প্রণেতা বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ জনগণকে বঞ্চিত করে রাখার শক্তি কারও নেই। এ ব্যাপারে আমি শতভাগ দেশের জনগণের পক্ষেই আছি। এই ঐক্যকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। সেই কারণেই জনগণের ঐক্যের নানা যুক্তিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি।’