নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালার বিষয়ে সুরাহা করতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বৈঠক গতকাল অনুষ্ঠিত হয়নি। ৩০ জুলাই প্রধান বিচারপতি এ ধরনের একটি বৈঠকের প্রস্তাব দেন। জবাবে পরদিন আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ৩ আগস্ট ওই বৈঠক হবে। গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমি খুবই অসুস্থ। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানিয়ে দিয়েছি, আজ (গতকাল) আসতে পারছি না। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে আপিল বিভাগ যে রায় দেয়, তাতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা তৈরির নির্দেশনা ছিল। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে জানায় আপিল বিভাগ। পরে ওই খসড়া সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেই সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়কে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয়।
ঢাবির ঐতিহ্য অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। সে ঐতিহ্য অনুযায়ী বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেন, একসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে যারা প্রথম শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হতেন তাদের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো, কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না। এটা অ্যালারমিং। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক খন্দকার তোফায়েল আহমেদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণার রায় নিয়ে শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল ওই শিক্ষকের ব্যাপারে হাই কোর্টের রায় স্থগিত করার আবেদন জানান। তবে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ হাই কোর্টের রায় স্থগিত না করে ‘নো অর্ডার’ দেয়। এ আদেশের ফলে দর্শন বিভাগের শিক্ষক তোফায়েল আহমেদের নিয়োগ অবৈধই থাকল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিন এবং তোফায়েলের পক্ষে এম কে রহমান শুনানি করেন।