শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
বগুড়ায় মা-মেয়ে নির্যাতন

মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত তুফান-রুমকি ফের রিমান্ডে

রাজশাহীতে ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশ, গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত তুফান-রুমকি ফের রিমান্ডে

বগুড়ায় ধর্ষিত কিশোরীর মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। কিশোরীর মেডিকেল রিপোর্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বৃহস্পতিবার রাতে পৌঁছেছে। কিশোরী ধর্ষণ এবং ধর্ষণের বিচার করার নামে পরে মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার ধর্ষক তুফান সরকার, বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি ও তুফানের সহযোগী মুন্নাকে গতকাল বিকালে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।

শুনানি শেষে বগুড়ার অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার ওসি (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ জানান, শজিমেক ফরেনসিক বিভাগের প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামতসহ মেয়েটির বয়স ১৭ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। শজিমেক ফরেসনিক বিভাগের নেতৃত্বে গঠিত বোর্ড এ রিপোর্ট পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে। শজিমেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে এম সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। ধর্ষক তুফান সরকার ও তার সহযোগী মুন্না দুই দিনের এবং কাউন্সিলর রুমকি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। গতকাল রিমান্ড শেষে তুফান ও রুমকিকে আবারও রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এই দিনে তুফান সরকারের সহযোগী মুন্না ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। কিশোরী নির্যাতনকারী তুফান সরকারের ভাই মতিন সরকারকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা খবর প্রকাশ করায় বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতি, বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এবং উত্তরবঙ্গ ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিক-আপ মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আবদুল মান্নান বগুড়ার বিভিন্ন পত্রিকায় বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। বিজ্ঞপিতে বলা হয়েছে : বগুড়া ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করছে; যা ভিত্তিহীন। এসব মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায় মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর ফলে যে কোনো সময় উত্তরাঞ্চল থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তি করার কথা বলে কিশোরীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন গ্রেফতার তুফান সরকার। ২৮ জুলাই দুপুরে ওই এলাকার পৌর কাউন্সিলর রুমকি ও তার সহযোগীরা বিষয়টি বিচারের নামে ওই মেয়ে ও তার মাকে ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে মারধর করে মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে তুফান সরকার ও তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে।

অভিযোগকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এবার ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগকারী একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিভাগের ১১ জন শিক্ষক। শিক্ষিকা রুখসানা পারভীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন বলে দাবি করেন তারা। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে একটি অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের শুনানো হয়। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবনের ৩২০ নম্বর কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন। সাংবাদিকদের জানানো হয়, অভিযোগকারী রুখসানা পারভীন ছাত্রছাত্রীদের লোভ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের দিয়ে বাসার কাজ করাতেন। প্রতিনিয়ত বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন ও অমার্জিত আচরণ করেন। এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষিকা রুখসানা পারভীন হুমকি দিয়ে বলেন, ‘পাছায় লাথি দিয়ে তোকে তিনতলা থেকে ফেলে দেব।’ অন্য এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুমি কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা কর, সেটা আমি দেখে  নেব।’ অন্য এক ছাত্রকে পরীক্ষায় ফেল করার ভয়ভীতি দেখিয়ে বার বার কাজের মেয়ে সরবরাহ করতে বাধ্য করেন। এ প্রসঙ্গে একটি অডিও রেকর্ড তারা শুনান। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষিকা রুখসানা পারভীন যে শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে কাজের মেয়ে সরবরাহ করে নিতেন তার নাম নাদিম মোস্তফা। তিনি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। নাদিম মোস্তফা এই প্রতিবেদককে জানান, ওই ম্যাম আমাকে নানাভাবে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন। এসব বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীন বলেন, নাদিমকে আমি অনেক সময় নানাভাবে সাহায্য করেছি। সে দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন একবার এক মোটরসাইকেল চুরি করেছিল। তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আমি সেই ঘটনায় তাকে পুলিশের হাত থেকে তাকে রক্ষা করেছিলাম। তারপর থেকেই তার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক হয়।

রাজশাহীতে ধর্ষণ করে ভিডিওচিত্র প্রকাশ ধর্ষক গ্রেফতার : রাজশাহীর পুঠিয়ায় স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের সময় ভিডিওচিত্র ধারণ করেছে এক যুবক। এরপর ওই ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অপরাধকর্মের জন্য আল মামুন (২৪) নামের যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আল মামুন নাটোর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি (এনএস) কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ও জিউপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সমশের আলীর ছেলে। জানা গেছে, ওই নারী গত বুধবার রাত ১০টার দিকে পুঠিয়া থানায় হাজির হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ গতকাল ভোর ৪টার দিকে নাটোর সিংড়া উপজেলার খরিসাক্ষা গ্রাম থেকে ধর্ষক আল মামুনকে গ্রেফতার করেছে। পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান ভূইয়া জানান, মামলার পর থেকে আল মামুন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন। বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবস্থান জানার পর গতকাল ভোর ৪ টার দিকে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার খরিসাক্ষা গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।

সর্বশেষ খবর