রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য ভয়ঙ্কর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য ভয়ঙ্কর

মওদুদ আহমদ

ষোড়শ সংশোধনীর আপিল বিভাগের রায় নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যকে অত্যন্ত ‘ভয়ঙ্কর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, যারা আদালতের রায়কে অবমূল্যায়ন করবে, তাদের পতন আরও এগিয়ে আসবে। সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী যতবার বাতিল করা হবে, ততবার সংসদে তা পাস করা হবে, যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর কথা। কারণ এতে প্রমাণিত হয়, সুপ্রিম কোর্ট ও বিচার বিভাগের ওপর এ সরকারের আস্থা নেই। তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ফোরামের এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ মন্তব্য করেন। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, গণফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি নেতা মো. মাইনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, বাতিল হওয়া ষোড়শ সংশোধনী সংশোধনের পথ অনুসরণ করলে সরকার মারাত্মক ভুল করবে। সরকার যদি মনে করে যে তারা বিচার বিভাগের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবে, তাহলে সে প্রতিযোগিতায় সরকার পরাজিত হবে। কেননা অতীতেও যারা বিচার বিভাগের ওপর হাত দিয়েছে, তাদের হাত পুড়ে গেছে। কারণ বিচার বিভাগ সার্ভাইভ করে যায়, পার্লামেন্ট সার্ভাইভ করতে পারে না। সরকারও সার্ভাইভ করতে পারে না। এর আগে শুক্রবার বিকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভূমি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা আমরা আবার পাস করব, ওই আইনটা। এই কনস্টিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্টটা (সাংবিধানিক সংশোধনী) আমরা আবার পাস করব এবং অনবরত করতে থাকব। দেখি, জুডিশিয়ারি কতদূর যায়। বিকজ জুডিশিয়ারির পজিশন আমার মতে আনটেনাবল (কারণ বিচার বিভাগের অবস্থান আমার মতে সমর্থনযোগ্য নয়)। মানুষের প্রতিনিধিদের ওপর তারা খবরদারি করবে? তাদের আমরা চাকরি দিই!’

নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করে সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করলেও নির্বাচন কমিশন এখনো সব দলের জন্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায় নিয়েই তাদের পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় শুধু ঐতিহাসিক নয়, বরং দেশের ১৬ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। এ রায় এখন জাতীয় দলিল। ফলে যারা এ রায়ের অবমূল্যায়ন করতে চান কিংবা সে উদ্যোগ নেন, তারা অনুশোচনা করবেন এবং এতে সরকারের পতন আরও ত্বরান্বিত হবে। মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার আগামী নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে বিরোধী দলের ওপর ষড়যন্ত্র ও নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন। এটা আদালত অবগত রয়েছে। অথচ এ নিয়ে শুরু হয়েছে ষড়যন্ত্র। সরকার থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। তাদের হুঁশিয়ারি দিতে চাই, ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে দুর্বল করা যায়নি। বরং বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর