সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

জটিল পথে হজযাত্রা

বাড়তি ২০০০ রিয়াল পরিশোধে অনেকে নিঃস্ব

মোস্তফা কাজল

জটিল হয়ে উঠছে হজযাত্রা। ই-ভিসা জটিলতা ও যাত্রী সংকটের কারণে অনেক হজযাত্রীর যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত ১১ দিনে ২০টি হজ ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন কমপক্ষে ১০ হাজার হজযাত্রী। বাতিল ২০টি হজ ফ্লাইটের যাত্রীদের কীভাবে সৌদি আরবে পাঠানো হবে এ নিয়ে চিন্তায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সাউদিয়া এয়ারলাইনস। বাড়তি শ্লট চেয়ে সৌদি সিভিল এভিয়েশনের কাছে পাঠানো চিঠির উত্তর পাওয়া গেছে গতকাল। সৌদি সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ২০টির পরিবর্তে ১২টি ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহনের  সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। এরপরও অবশিষ্ট থেকে যাচ্ছে কমপক্ষে বাতিল হওয়া আরও ৮টি হজ ফ্লাইট। প্রতি ফ্লাইটে বাংলাদেশ বিমানের ৪১৯ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা থাকলেও অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছেন প্রায় ৫ হাজার হজযাত্রী। এসবের পাশাপাশি জটিলতা নিরসনে ধর্ম মন্ত্রণালয় রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ শতকরা ৪ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৭ ভাগ করেছে। এ ছাড়া সৌদি সরকার বলেছে, আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত  ই-হজ ভিসা প্রসেস করা যাবে। গত ২ আগস্ট বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ভিসা ও অন্যান্য কারণে হজ ফ্লাইট জটিলতা দু-এক দিনের মধ্যে সমাধান না হলে আরও সমস্যা দাঁড়িয়ে যাবে। মন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর ছয় দিন পেরিয়ে গেছে। এখনো যাত্রী সংকটের সমাধান করা যায়নি। ই-ভিসা জটিলতায় হজ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হজে গেছেন এমন পাঁচ হাজার হজযাত্রী নতুন সমস্যায় পড়েছেন। কারণ নতুন করে ভিসা ফির সঙ্গে ২০০০ রিয়াল জমা দিতে হচ্ছে তাদের। মক্কা ও মদিনায় অবস্থানরত অনেক হাজী এ টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে নিঃস্ব। আবার অনেকে ঢাকা থেকে টাকা নানা উপায়ে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। বাড়তি ২০০০ রিয়াল পরিশোধ করতে গিয়ে অনেকে অর্থ কষ্টে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের ১৬টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। একই সঙ্গে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের চারটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এদিকে পুনঃ হজযাত্রীদের অতিরিক্ত ২০০০ রিয়াল মওকুফ করেনি সৌদি সরকার। গতকাল এ বিষয়ে আগের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। এমন সিদ্ধন্তের কথা বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করেছে গতকাল। এর আগে সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তের পর দেশটির হজ এবং ওমরাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত অর্থ মওকুফের আবেদন জানানো হয়। গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার সহকারী সচিব এস এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, এ নিয়ম হজ এবং ওমরা পালনকারী সব দেশের হাজীদের জন্য করা হয়েছে। এ অর্থ মওকুফ বা স্থগিত করার কোনো সুযোগ নেই। বিমান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অতীতে প্রথম ১০ দিনে বিমানের কোনো সিট খালি যায়নি। এবারই প্রথম ১০ দিনে অনেকে হজে যেতে পারেননি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর