সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

গ্রামীণ ব্যাংকে পরিচালক নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড়

হঠাৎ সভা মন্ত্রীর বাসায়

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

আবারও আলোচনায় এলো গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যু। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নির্বাচন নিয়ে হঠাৎ তোড়জোড় শুরু হয়েছে সরকারের মধ্যে। গতকাল রাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসায় এ ইস্যুতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাচন নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের  সঙ্গেও আলোচনা চলছে।

অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আজকের (গতকাল) এই সভাটি হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সভার বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ সম্পর্কে সরকারের এই সিনিয়র সচিব বলেন, আপনি জানেন, গ্রামীণ ব্যাংকের নির্বাচিত পরিচালকদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৫ সালে। আমরা তখন নির্বাচনের জন্য বিধিমালা জারি করেছিলাম। কিন্তু এর ওপর একাধিক মামলা দায়ের করে সেই প্রক্রিয়া থামিয়ে দেওয়া হয়। এখনো দুটি মামলা রয়েছে। এই দুটি মামলা নিষ্পন্ন করে কীভাবে পরিচালকদের নির্বাচন সম্পন্ন করা যায় তা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গেও আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেন ইউনুসুর রহমান।

পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন চেয়ে চিঠি : গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন নিয়ে গত ১৬ আগস্ট অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে একটি চিঠি পাঠান ব্যাংকটিতে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত বোর্ড চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক। চিঠিতে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের নয়জন নির্বাচিত পরিচালক ২০১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। গ্রামীণ ব্যাংক আইন-২০১৩ এর ১১(১) উপধারা মতে ‘নির্বাচিত পরিচালকগণের কার্যকাল হইবে প্রতি মেয়াদে সর্বোচ্চ তিন বৎসর।’ সে অনুযায়ী ওই ৯ পরিচালকের মেয়াদ ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তিন বছর পূর্ণ হয়েছে।  চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই পরিচালক নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক (পরিচালক নির্বাচন) বিধিমালা ২০১৪ (সংযুক্ত-২) এবং ৬(১) উপবিধি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত না হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের মত সংবিধিবদ্ধ একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না, যা আমরা কেউই কামনা করি না।  চিঠিতে বলা হয়, বিদ্যমান নির্বাচিত পরিচালকরা বিধিমালা, ২০১৪ এর ৫(১) উপবিধি অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদে তাদের সদস্যপদ বহাল আছে বলে দাবি করছেন। এতে করে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় পূর্ণাঙ্গ বোর্ড না থাকলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ আটকে থাকে এবং সার্বিক কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।  চিঠিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান গ্রামীণ ব্যাংক (পরিচালক নির্বাচন) বিধিমালা ২০১৪-এর বেশ কয়েকটি বিধি ও উপবিধি সংশোধনের তাগিদ দেন। তিনি বলেন, ওই বিধি ও উপবিধি সংশোধনের অনুমোদন দেওয়া হলে দ্রুততম সময়ে পরিচালক নির্বাচন করা যেতে পারে এবং বর্তমান সমস্যার সমাধান হতে পারে। এর ফলে পরিচালক নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হবে। একই সঙ্গে আদালতে চলমান মামলার গুরুত্বও হ্রাস পাবে। গতকাল বিকালে যোগাযোগ করা হলে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক জানান, তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন। গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে কোনো মন্তব্যও তিনি করতে পারবেন না।

সর্বশেষ খবর