সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুর্নীতি করে কেউ পালিয়ে থাকতে পারবে না

—দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় কেউ ইচ্ছে করলেই পালিয়ে থাকতে পারবেন না। তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয় এবং প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, পরিচালক ও মহাপরিচালক পদমর্যাদার সব কর্মকর্তার সঙ্গে এক জরুরি সভায় এসব কথা বলেন। সভায় দুদক চেয়ারম্যান, দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কাগজ-পত্র পর্যবেক্ষণ,  ভয়-ভীতি প্রদর্শন না করে সঠিকভাবে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, তদন্ত প্রতিবেদনে স্কেচ ম্যাপ সংযোজন, যথাসময়ে কেস ডায়েরি লিখন, প্রাসঙ্গিক তথ্য সংযোজন, অপ্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান না করার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া সময়সীমার মধ্যে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্য সম্পাদন করা নির্দেশ দেন। সভায় দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, পরিচালক মো. আবুল হাসান, মো. আবদুল আজিজ ভূঁইয়া, নাসিম আনোয়ার ও মো. আবু সাঈদ বক্তব্য রাখেন।

দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, সঠিকভাবে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা হলে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কমিশনের শতভাগ মামলার সাজা নিশ্চিত করা সম্ভব। কমিশনের মামলা দালিলিক প্রমাণাদি নির্ভর। কোনো মামলাই অনুমান নির্ভর কিংবা ধারণাভিত্তিক নয়। প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দায় সুনির্দিষ্ট করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রণয়নেরও নির্দেশ দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বর্তমান কমিশন পদোন্নতির ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিধি-বিধানের পরিপন্থী কিছুই করবেন না। তিনি বলেন, পদোন্নতি, পদায়ন এবং প্রশিক্ষণের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নে নির্দেশ দেওয়া হয়। নীতিমালা হলেই তা অনুসরণপূর্বক পদোন্নতি প্রদান করা হবে। এমনকি বদলির ক্ষেত্রেও নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। গণশুনানির প্রসঙ্গ টেনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটি গণশুনানির পর পরই সারমর্ম সংবলিত একটি প্রতিবেদন কমিশনে জমা প্রদানের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া গণশুনানিতে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাত্ক্ষণিকভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, গণশুনানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি, এমনকি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কমিশনের একজন পরিচালককে প্রতিটি গণশুনানির পর তাত্ক্ষণিকভাবে কমিশনে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, গণশুনানি একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম, কারণ এটিও জনগণের অভিযোগ প্রদানের একটি ফোরাম, জনগণের অভিযোগ অবশ্যই দ্রুত আমলে নিতে হবে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় যে সব আসামি এখনো আইন-আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। কিংবা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে কমিশনের তদন্ত কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ভালো কাজ করলে যেমন পুরস্কৃত করা হবে, তেমনি খারাপ কাজ করলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরুরি এ সভায় দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, কমিশন এখন পর্যন্ত ৬১টি গণশুনানি সম্পন্ন করছে। ফলো-আপ গণশুনানি বাস্তবায়ন করা গেলে জনগণ উপকৃত হবে। অপর কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত মিথ্যা তথ্য দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর