বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

২৮ হজ এজেন্সির কারসাজিতে ভিসা হয়নি ৫১০০ হজযাত্রীর

মোস্তফা কাজল

২৮ হজ এজেন্সির কারসাজিতে ভিসা হয়নি ৫ হাজার ১০০ হজযাত্রীর। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এদের হজ পালন। চলতি বছর নির্ধারিত সময়ে ভিসার আবেদন করেনি এসব এজেন্সি। গতকাল এসব এজেন্সিকে ভিসার জন্য আবেদন করতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম  দিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘চলতি বছরের হজ জটিলতায় ওই ২৮ হজ এজেন্সির কারসাজি রয়েছে। এসব এজেন্সি হজযাত্রীদের হজ পালনে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার জন্য দায়ী থাকবে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে আবেদনে ব্যর্থ হলে ওইসব হজ এজেন্সির লাইসেন্সসহ জামানত বাতিল করা হবে।’ গতকাল দুপুরে আশকোনা হজ ক্যাম্পে হজের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অনির্ধারিত মতবিনিময়কালে এসব কথা জানান মন্ত্রী। এদিকে ফ্লাইট জটিলতা বড় ধরনের কোনো সমস্যা নয় বলে দাবি করে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যেসব এজেন্সি এখনো ভিসার জন্য আবেদন করেনি তাদের ১০ আগস্টের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জটিল কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। প্রতি বছরই এমন ধরনের ফ্লাইট বাতিল হয়। কোনো এজেন্সি যদি নিয়ম মেনে না চলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৬ আগস্ট পর্যন্ত ২৮টি এজেন্সি তাদের ৫ হাজার ১১৭ হজযাত্রীর ভিসার আবেদন জমা দেয়নি। এজেন্সিগুলো হলো : রিয়েল ইন্টারন্যাশনাল ১৬৮, বদরপুর ট্রাভেলস্ অ্যান্ড ট্যুরস্ ২৪১, আজমল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ১৫৯, ফারুক ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৮৭, গোল্ডেন ট্রাভেলস্ অ্যান্ড কার্গো সার্ভিসেস ২৫১, এআরএস ট্রাভেলস্ ১৫৪, ঢাকা হজ কাফেলা অ্যান্ড ট্রাভেলস্ ১৮২, ঢাকা ট্রাভেলস্ অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৫৩, গ্লোব ট্যুরস্ অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সি ১৬৪, হাবিব এয়ার ট্রাভেলস্ অ্যান্ড ট্যুরস্ ২২০, হা-মিম ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৫৪, ইহরাম এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ১৬৭, কাশেম ট্যুরস্ অ্যান্ড ট্রাভেলস্ ২০২, এমএএম ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৫০, এম/এস এম নুর ই মদিনা হাজি ট্রাভেলস্ ২০৮, মাবরুর এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ১৬৪, মাহির হজ সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৭২, মক্কা বাবে জান্নাত ট্রাভেলস্ অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৫৮, মেছফালা ট্রাভেলস্ ২২৫, এমএইচএম ওভারসিজ ১৮০, মদিনা এয়ার ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন ১৬৬, পেনাং ট্রাভেলস্ অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৫১, সিনেটর এয়ার ট্রাভেলস্ ১৯৪, এম/এস মক্কা অ্যান্ড মদিনা ট্রাভেলস্ ২৬৫, সাকের হজ কাফেলা অ্যান্ড ট্রাভেলস্ ১৫৪, মিম ট্রাভেলস্ ইন্টারন্যাশনাল ১৬৮, তাওসিফ ট্রাভেলস্ অ্যান্ড ট্যুরস্ ১৫৫ ও এম আলী ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস ২০৯ জন।

বাতিল হজ ফ্লাইটের জটিলতা কাটেনি : বাতিল হজ ফ্লাইটগুলোর বিপরীতে জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া শ্লট পাওয়ার বিষয়ে এখনো কিছুটা সমস্যা রয়ে গেছে। ফলে ভিসা জটিলতার কারণে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের বাতিল ১৭টি ফ্লাইটের ৭ হাজারের বেশি হজযাত্রীর ভাগ্য এখনো অনিশ্চিত। এ ছাড়া সব হজযাত্রীকে হজ করানোর বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয়ে হজ ক্যাম্পের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসা জটিলতা অনেকটা কেটে গেছে। আমরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। বিমানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি হজ ফ্লাইটে ফুল হজযাত্রী পরিবহনের চেষ্টা করছি। দু-এক দিনের মধ্যে বাতিল ফ্লাইটের আরও কিছু যাত্রী যেতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে “ক্যাপাসিটি লস” দিয়েই এ বছর হজ ফ্লাইট চালাবে বাংলাদেশ বিমান।’ জানা গেছে, গতকাল বাতিল হওয়া আরও দুই হজ ফ্লাইটের রি-শিডিউলিং করা হয় বিজি-৩০৩৯ ও বিজি-৩০৪১। ফ্লাইট দুটি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা।

সর্বশেষ খবর