শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

নারী নেতৃত্বে সমান সমান আওয়ামী লীগ বিএনপি

পিছিয়ে ইসলামী দলগুলো প্রতিবেদন দেয়নি ৫টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সব কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্বের যে প্রতিবেদন দলগুলো নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একই পরিসংখ্যান এসেছে। তবে অধিকাংশই বর্তমান অবস্থান তুলে না ধরে ২০২০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। আর ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেয়নি পাঁচটি রাজনৈতিক দল। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলে নারী প্রতিনিধিত্ব দিন দিন বাড়লেও পিছিয়ে আছে ইসলামী দলগুলো। অনেক ইসলামী দলে ১ ভাগও নারী নেই।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই তাদের সকল পর্যায়ের কমিটিতে ১৫ শতাংশ নারী সদস্য থাকার কথা জানিয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এখন নারী প্রতিনিধিত্ব ১৯ শতাংশ বলে দলটি জানিয়েছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে দলের সকল পর্যায়ের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। দলগুলো নিবন্ধন নেওয়ার সময় এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে ১৩ জুন দলগুলোকে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। এজন্য ১০ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হলেও অর্ধেকেরও কম দলের সাড়া পাওয়ায় তাগিদপত্র দেওয়া হয়। পরে ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে এখনো পাঁচটি দল প্রতিবেদন দেয়নি বলে ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা জানিয়েছেন। এ দলগুলো হলো বিকল্পধারা বাংলাদেশ, গণফোরাম, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন,  ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি। এদিকে যারা প্রতিবেদন দিয়েছে, তার অধিকাংশই বর্তমান অবস্থান তুলে না ধরে ২০২০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে বলে আশার কথা জানিয়েছে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) বলেছে, তাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ১১ দশমিক ৯৯ ও জেলা কমিটিতে ৮ থেকে ১০ শতাংশ নারী সদস্য আছেন।

বিপাকে ইসলামী দলগুলো : নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দলে ৩৩ ভাগ নারী প্রতিনিধি রাখা নিয়ে বিপাকে পড়েছে ইসলামী দলগুলো। ২০২০ সালের মধ্যে এ প্রতিশ্রুতি পূরণ না করতে পারলে দলগুলো নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। ইসি কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলে নারী প্রতিনিধিত্ব দিন দিন বাড়লেও পিছিয়ে আছে ইসলামী দলগুলো। অনেক ইসলামী দলে ১ ভাগও নারী সদস্য নেই। নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইসলামী ও ধর্মভিত্তিক দল রয়েছে ১১টি। এর মধ্যে এমন দলও আছে যাদের কেন্দ্রীয় বা তৃণমূলের কোনো কমিটিতেই কোনো নারী সদস্য নেই। শর্ত পূরণে তাদের হাতে সময় আছে মাত্র সাড়ে তিন বছর। এ অবস্থায় ইসলামী দলগুলোর নেতারা বলছেন, বাস্তবতা বিবেচনায় তাদের আরও সময় দিতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী নেতৃত্বের বিকাশের প্রতি তাদের সমর্থন থাকলেও স্বল্পসময়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার বিষয়টি ‘চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে তারা মনে করছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলের সকল পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামী দলগুলো এখন সেই শর্ত পূরণ নিয়ে বিপাকে রয়েছে। তারা আদৌ এ শর্ত পূরণ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

সর্বশেষ খবর