শিরোনাম
শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে আসে যুদ্ধাপরাধীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে আসে যুদ্ধাপরাধীরা

ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম (অব.)

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম (অব.) এমপি বলেন, নয় মাস পাকিস্তানে কারাবন্দী থাকার পর দেশে ফিরে এলেন স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শুরু করেন দেশ গড়ার কাজ। চক্রান্তের শুরু সেখান থেকেই। যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামী, আলবদর, আলশামস এ সময় বেরিয়ে আসে। তারা জাসদের কাঁধে ভর করে সামনে চলে আসে। সেনাবাহিনীর মধ্যে নানা রকমের কুৎসা রটনা করা হলো। আর এসব ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য ছিল জাতির পিতাকে হত্যা করা।

সেই কালো অধ্যায়ের স্মৃতিচারণা করে এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে যশোরের সেকেন্ড ফিল্ড আর্টিলারি থেকে ঢাকায় আনা হয় প্রধান ঘাতক কর্নেল রশীদকে। ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টে প্রস্তুত রাখা হয় মেজর ফারুককে। অন্যদিকে রক্ষীবাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার নুরুজ্জামানকে ট্রেনিংয়ের নামে পাঠানো হয় আমেরিকায়। আর তার সেকেন্ড ইন কমান্ড তখন ঢাকার বাইরে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা হিসেবে আমরা যাকে জানি সেই কর্নেল রশীদ ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে সেকেন্ড ফিল্ড আর্টিলারিতে যোগদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার তিন মাস আগে তাকে পোস্টিং দিয়ে কর্মস্থল যশোর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এ লোকগুলোই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রেক্ষাপট বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্রেনিংয়ের অজুহাতে বের হয় ট্যাঙ্ক টি-৫৪। জড় হয় পুরান বিমানবন্দর এলাকায়। সেখানে কর্নেল ফারুক তার সঙ্গীদের বুঝিয়ে দেন সব পরিকল্পনা। টার্গেট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর। ২৭ নম্বর রোড, সোবহানবাগ মসজিদ আর ৩২ নম্বর রোডে তৈরি করা হয় ব্লক। নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। আর রক্ষীবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে ট্যাঙ্ক নিয়ে প্রস্তুত থাকেন মেজর ফারুক। দেশবাসী যখন গভীর ঘুমে ঠিক তখন ভোর ৪টায় জাতির মহানায়কের ওপর চলে জঘন্যতম হামলা। নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো বঙ্গবন্ধুকে; হত্যা করা হয় তার পরিবারের ১৭ জন সদস্যকে। ষড়যন্ত্রের বিষয়ে ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল (অব.) বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা চাওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুকে কারাভোগ করতে হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য তিনি পুরো জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর পাল্টে যায় দেশের গতিপথ। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা স্বাধীনতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে মুছে দিতে এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড চালায়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বাঙালির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।

সর্বশেষ খবর