বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

শোক শ্রদ্ধায় স্মরণ বঙ্গবন্ধুকে

নানা কর্মসূচিতে জাতীয় শোক দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

শোক শ্রদ্ধায় স্মরণ বঙ্গবন্ধুকে

টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

শোক আর বিনম্র শ্রদ্ধায় গতকাল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেছে বাঙালি জাতি। শোকাবহ এই দিনে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাঞ্জলিতে সিক্ত হয়েছে টুঙ্গিপাড়ার সমাধিস্থল, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও বনানী কবরস্থান। শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন, পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করার অঙ্গীকার ধ্বনিত হয়েছে এবারের জাতীয় শোক দিবসে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গি নির্মূলসহ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেওয়ারও দৃঢ় অঙ্গীকার করা হয়েছে জাতির জনকের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকীতে। গতকাল দিনভর ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন ও টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিস্থলে ছিল সর্বস্তরের জনতার ঢল। সকালে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়াও তিন বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ছোটবোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া এবং প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের স্মৃতিবিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনের ভিতরে যান। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে ওই ভবনের যে সিঁড়িতে ঘাতকদের গুলিতে বঙ্গবন্ধুর প্রাণহীন দেহ পড়েছিল, সেখানে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন তিনি। ওই স্থানটিতে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করে শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য তিনি দোয়া করেন। সেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে তার বাবার স্মৃতিচিহ্নগুলো দেখেন। প্রায় আধা ঘণ্টা বঙ্গবন্ধু ভবনে অবস্থান শেষে প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে গিয়ে তার পরিবারের অন্য সদস্য ও স্বজনসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে পুষ্প অর্পণ করেন। কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন তিনি। এরপর তিনি পবিত্র ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এখানেও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এরপর প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে টুঙ্গিপাড়া যান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ। ভোর থেকেই জাতির জনকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে ও আশপাশের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে মানুষের ভিড় বঙ্গবন্ধু ভবনের আশপাশ পেরিয়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে এবার মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ধানমন্ডি ৩২-এর কাছাকাছি পান্থপথে একটি হোটেলে আত্মঘাতী জঙ্গির অবস্থানের খবরে। পুলিশের অপারেশনে জঙ্গি সাইফুল আত্মঘাতী হয়। তবে এতে ধানমন্ডি ৩২-এ মানুষের সে াতের গতি বিন্দুমাত্র কমেনি। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ছুটিও ছিল গতকাল। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু ভবন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করে। সংবাদপত্রগুলো শোক দিবসের বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করে বিশেষ অনুষ্ঠান। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর অলিগলিতে মাইকে বাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান ও কবিতা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণামূলক গানও বাজানো হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। থানা, ওয়ার্ড ও মহল্লাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের উদ্যোগে দিনব্যাপী কোরআনখানি, মোনাজাত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর থানা ও ওয়ার্ড ইউনিটগুলো। সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।  

টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা : জাতীয় শোক দিবসে গতকাল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণের জন্য নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর ছোটবোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ১৫ আগস্টে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন। তিনি ছোটবোন শেখ রেহানাকে হাত দিয়ে আগলে রাখেন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। পরে বেলা ১১টায় মাজার কমপ্লেক্স মসজিদে জাতির জনকের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত মিলাদ এবং দোয়া মাহফিলে তিনি অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, পুলিশের আইজি, র?্যাবের মহাপরিচালক, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধুর সমাধি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সারা দিন মানুষের ঢল নামে বঙ্গবন্ধুর মাজার প্রাঙ্গণে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। টুঙ্গিপাড়ার কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে তিনি ঢাকায় ফেরেন। উভয় স্থানে জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হেলাল উদ্দিন, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম প্রমুখ।

ধানমন্ডিতে অশ্রুসিক্ত জনতার ঢল : গতকাল বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকীতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে নামে শোকার্ত জনতার ঢল। গভীর শ্রদ্ধা আর সিক্ত নয়নে কৃতজ্ঞ জাতি নতমস্তকে স্মরণ করে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভবন থেকে নিউমার্কেট ও আসাদগেট রাস্তা ও এর চারপাশে ছিল হাজারো কালো রঙের ব্যানার। লাখো জনতার গায়ে পোশাকের রংও কালো। যাদের পরনে ভিন্ন রঙের বসন, তারা ধারণ করেছেন কালো ব্যাজ। হাতে ছিল কালো পতাকা ও পুষ্পস্তবক। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে মানুষের এই মিলনমেলায় পা ফেলার জায়গা ছিল না। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর কিংবা বৃদ্ধ সবাই এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে। ফার্মগেট থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন নাইমুর রহমান। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, শিশু বয়স থেকেই ওরা যেন নিজেদের জাতিসত্তাকে চেনে, জাতির পিতাকে জানে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত তার এই আত্মত্যাগ পৌঁছে দিতে হবে। ১৫ আগস্ট রাতের অন্ধকারে ঘাতকরা নিভিয়ে দিয়েছিল জাতির জনকের জীবন প্রদীপ। ছোট শিশুসহ পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করেছিল নির্মমভাবে। সেই সব ছবি দেখে স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠে মন। মনের অজান্তেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষগুলোর চোখের কোণায় ছলকে ওঠে এক ফোঁটা জল। এবার শ্রদ্ধা জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের সে াত অতীতের সব রেকর্ড ম্লান করে দেয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি, ছাত্রলীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, পরে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এ ছাড়া জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, জাতীয় পার্টিসহ (জেপি) বিভিন্ন দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধুকে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, মহিলা শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ফিল্ম আর্কাইভ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব পরিষদ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল ইনস্টিটিউট, শিশু একাডেমি, খেলাঘর, বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, রাশিয়া-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাসহ (বাসস) অজস  দল ও সংগঠন।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার ছিল উন্মুক্ত। বিনা টিকিটেই শিক্ষার্থীরা নভোথিয়েটারে তথ্যচিত্র প্রদর্শনী দেখেছে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর জীবন এবং তার দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র প্রদর্শনী হয়।

বঙ্গভবনে মিলাদ : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল বঙ্গভবনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জোহরের নামাজের পর দরবার হলে অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ যোগ দেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মিলাদ মাহফিলে রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য এবং বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

মহিলা আওয়ামী লীগের মিলাদে প্রধানমন্ত্রীর যোগদান : মহিলা আওয়ামী লীগ বাদ আসর ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেন। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাসহ প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিলাদে যোগ দেন। মিলাদে ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।

যুবলীগ দক্ষিণের তবারক বিতরণ : জাতির জনকের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ২০০ গরু জবাই করে গরিব-দুঃখী মানুষের মধ্যে তবারক বিতরণ করেন। তিনি জানান, যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশে জাতির জনকের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করা হয়।

করেছে। এরমধ্যে রয়েছে— শিশুদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর চিত্র অংকন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার প্রদান ও দোয়া মাহফিল। এতে অংশ নেন— আগামী প্রকাশনীর কর্ণধার ওসমান গনি, এফবিসিসিআই পরিচালক হাজী হাফেজ হারুন, হেলেনা জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। গতকাল সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রায় ১ হাজার ২০০ দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এতে অংশ নেন— রিহ্যাব সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া, পরিচালক কামাল মাহমুদ, নাইমুল হাসান, আসাদুর রহমান জোয়ার্দ্দার, প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন, শাকিল কামাল চৌধুরী, এস এম জাহিদুর রহমান, মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।

শরীয়তপুর মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজ ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল শোক র‍্যালি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলেঅচনা সভা মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।

সর্বশেষ খবর