বন্যার কারণে এবার খালেদা জিয়ার ৭২তম জন্মদিনে ঢাকাসহ দেশের কোথাও কেক কাটার কোনো অনুষ্ঠান করেনি বিএনপি। লন্ডনেও কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। লন্ডন থেকে গতকাল দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রত্যেক নেতাকে বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল নিজের ৭২তম জন্মদিনে অনুষ্ঠানের বদলে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জানা গেছে, জন্মদিনের কোনো অনুষ্ঠানেই গতকাল অংশ নেননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দিনভর তারা লন্ডনের বাসাতেই কাটিয়েছেন। দেশের কোথাও জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটার কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা না হলেও বিএনপি প্রধানের শারীরিক সুস্থতা কামনায় প্রায় প্রতিটি জেলায় গতকাল দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দলের কেন্দ্রীয় একটি সূত্র জানায়, বিনা কারণে দলের যে নেতা-কর্মী বন্যাদুর্গত এলাকায় যাবেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খালেদা জিয়া। কেন্দ্রীয় নেতাদের বন্যাকবলিত এলাকায় মাঠে নামার জন্য নামের তালিকা তৈরি করে দায়িত্ব বণ্টন ও সমন্বয় করবে দলের দফতর শাখা। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয়ভাবে একটি মনিটরিং সেলও গঠন করা হচ্ছে— যারা দুর্গত এলাকায় দলীয় নেতাদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবেন। দলীয় নেতাদের পাশাপাশি দেশের সব বিত্তবানসহ সর্বস্তরের মানুষকে যার যার সাধ্যানুযায়ী বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি প্রধান। চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতারাসহ দলের পক্ষ থেকে যারা জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়ন চাচ্ছেন তাদের বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দেখতে চান খালেদা জিয়া। বেগম জিয়া তার নির্দেশনায়— শহরের এসি রুমে বসে থেকে বিএনপির মনোনয়ন যারা প্রত্যাশা করছেন তাদের ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারির কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান। এদিকে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ গতকাল জানান, বন্যার কারণে এবার খালেদা জিয়ার জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকা এবং বন্যার্তদের কথা বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি এবার খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক কাটার অনুষ্ঠান করছে না। এর পরিবর্তে সারা দেশে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের পর থেকে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করা হয়। ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেকও কাটতেন তিনি। তার এই জন্মদিন পালন করা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক আছে। তবে গত বছর এবং চলতি বছর কোনো অনুষ্ঠান করেননি খালেদা জিয়া।