শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিজের অবস্থানই বুঝতে পারছেন না ট্রাম্প!

এবার বরখাস্ত প্রধান কৌশলী স্টিভ বেনন

প্রতিদিন ডেস্ক

নিজের অবস্থানই বুঝতে পারছেন না ট্রাম্প!

সব অবস্থান থেকে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিষয়টি তিনি অনুধাবন করতে পারছেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বুধবার ট্রাম্প টাওয়ারে সাংবাদিক বৈঠকে শ্বেতাঙ্গ-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে দুই পক্ষকে দায়ী করে তিনি যেভাবে বর্ণবিদ্বেষকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, তা নিয়ে চরম নাখোশ তার প্রশাসনের লোকজন। যদিও ট্রাম্পের দাবি, তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। এই নিয়ে টুইটে তিনি সংবাদমাধ্যমের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘লোকে দেখতেই পাচ্ছে ওরা কত অসৎ। ঘৃণা, অসহিষ্ণুতা নিয়ে যা বলেছি, তার পুরো ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। লজ্জাজনক!’ যদিও গণমাধ্যমকে দোষারোপ করা ট্রাম্পের পুরনো অভ্যাস। কিন্তু তারপরও সচেতন মানুষ ট্রাম্পের আচরণে অনেকটা বীতশ্রদ্ধ। ধনকুবের থেকে প্রেসিডেন্ট বনে যাওয়া ট্রাম্প কিন্তু এবার ধাক্কা খেয়েছেন ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলেও। ট্রাম্পের নাম না করে বর্ণবিদ্বেষী হিংসার নিন্দা করেছেন দেশের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেল্লা, অ্যাপল প্রধান টিম কুক, ফেসবুক সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গসহ বাদ নেই কেউই। ট্রাম্পের সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না রিপাবলিকানদের একাংশও।

অথচ এর মধ্যেও ট্রাম্প তার মতোই আছেন, আর গভীর রাতে করছেন টুইট। তবে ব্যবসায়িক মহলে ট্রাম্পের নিন্দা দেখে অবাক অনেকেই। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার, ওই ঘটনার জেরে ‘বর্ণবিদ্বেষ, অসহিষ্ণুতা এবং হিংসা’র বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক সহযোগী এবং ব্ল্যাকস্টোন গোষ্ঠীর সিইও স্টিফেন শোয়ার্জম্যান প্রেসিডেন্টের ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পলিসি ফোরাম’ থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প তার আগেই স্রেফ এক টুইটে তাকে ছেঁটে ফেলেছেন! দুটি ব্যবসায়িক উপদেষ্টা কাউন্সিল বাতিলও করে দিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিন্দা চলছেই। মার্কিন সেনা, বিমান, নৌ বাহিনী প্রত্যেক বাহিনীর প্রধানও নব্য নািস এবং বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ট্রাম্পের মত পরিবর্তন নিয়ে যে তৎপরতা সৃষ্টি হয়েছে তাতে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন শীর্ষ কিছু কোম্পানির নির্বাহী কর্মীরা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেল্লা তার কর্মীদের বলেছেন, ‘বৈষম্য, অসহিষ্ণুতা এবং অর্থহীন হিংসার কোনো স্থান নেই।’ কর্মীদের তার বার্তা, ‘মাইক্রোসফটে আমরা সবাই যেন একজোট থাকি।’ অ্যাপলের টিম কুক কর্মীদের ই-মেইলে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একমত নই। অতি-দক্ষিণ শ্বেতাঙ্গ বা নব্য নািস এবং যারা মানবাধিকারের প্রশ্নে অতি দক্ষিণদের বিরোধিতা করছেন, এই দুই পক্ষের সমান নৈতিক দায় রয়েছে এটা মানতে পারছি না।’ ফেসবুকে জুকারবার্গের মন্তব্য, ‘সমাজে ঘৃণার কোনো জায়গা নেই।’ এখন দেখার সময় সবাইকে চটিয়ে কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন ট্রাম্প।

এবার প্রধান কৌশলীকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প : একের পর এক কর্মকর্তা বরখাস্ত করেই চলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাইকেল ফ্লিন, রায়ান্স প্রিবাস, স্কারামুচ্চির পর এবার হোয়াইট হাউস ছাড়লেন ট্রাম্পের প্রধান কৌশলী (চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট) স্টিভ বেনন। তিনিও অত্যন্ত প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।  প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে গতকালই বরখাস্ত করেছেন। এ খবর দিয়েছে সিএনএন। সম্প্রতি স্টিভ বেননের ওপর ব্যক্তিগতভাবে ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ট্রাম্প। নিউ জার্সিতে নিজের গলফ কোর্স থেকে বৃহস্পতিবার তার ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন ট্রাম্প। স্টিভ বেননের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিবিরুদ্ধ কথা বলেছেন। হোয়াইট হাউসের স্টিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জন কেলি দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহ পরে এমন ভাগ্যবরণ করতে হলো স্টিভ বেননকে। এএফপি, বিবিসি, সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর