বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আদালত অবমাননা

—— ফখরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যেই দেশের প্রধান বিচারপতিসহ বিচার বিভাগের কড়া সমালোচনা করেছেন। রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভকে সাংঘর্ষিক করে তুলেছেন। এতে আর রাষ্ট্র থাকে না। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে তিনি মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন। রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানকে তারা রেহাই দিচ্ছেন না। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের  রায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান বিচারপতিসহ বিচার বিভাগের ওপর ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছেন। এটা অবশ্যই আদালত অবমাননা।’ গতকাল রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনামূলক বক্তব্যের জবাবেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি করে তোলাকে আমরা অশনি সংকেত বলে মনে করছি। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জনগণকে প্রধান বিচারপতিসহ বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এর ফলে আমরা দেশে ভয়াবহ নৈরাজ্যের আশঙ্কা করছি। প্রধানমন্ত্রীর এই ভূমিকা আগুন নিয়ে খেলার শামিল। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ফল কখনই শুভ হয় না। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় আমাদের রায় মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অতীতে বেশ কিছু রায় আমাদের বিরুদ্ধে যায়, তবুও আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর রায় তাদের বিরুদ্ধে যাওয়ায় উচ্চ আদালতের ওপর আক্রমণ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য বিচার বিভাগকে ধ্বংস করতে চান। আমরা সর্বস্তরের জনগণকে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিগত ৪৪ বছরে বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনো হয়নি। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন আজকের প্রধানমন্ত্রী।’ এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অবশ্যই আদালত অবমাননা। শুধু অবমাননাই নয়, নজিরবিহীন ঘটনা। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে এমনটা করতে পারতেন না প্রধানমন্ত্রী।’ সর্বোচ্চ আদালতের ধৈর্যধারণ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের এ ধৈর্যধারণ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সরকারের প্রধানসহ মন্ত্রী-নেতারা যেভাবে বিষোদগার করছেন, সুপ্রিম কোর্ট চাইলে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু তারা তা না করে সর্বোচ্চ ধৈর্যধারণ করেছেন।’

সর্বশেষ খবর