বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংশয় প্রকাশকারীদের রক্ত পরীক্ষা করা উচিত

রফিকুল ইসলাম রনি

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংশয় প্রকাশকারীদের রক্ত পরীক্ষা করা উচিত

ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তাদের রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। এই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বাংলাদেশে বসবাস করলেও অন্তরে তাদের পাকিস্তান।’

গতকাল সংসদ ভবনের কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। ক্যাপ্টেন তাজ বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতি যদি কারও এতই দরদ থাকে তাহলে পাকিস্তানে চলে যান। একটা কথা মনে রাখবেন, এটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ। কারও দয়ায় পাওয়া নয়। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর অবদানকে খাটো করার আগে সংযত হোন।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করেন তারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য নাম। সেই বঙ্গবন্ধুর নামে যারা কটাক্ষ করেন তারা বানরের বংশধর। বানর যেমন বুড়া হয়ে গেলে নাচে, এরা হলো সেই ধরনের লোক।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গৌরবের বিষয় হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার বক্তৃতার মাধ্যমে নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা দিয়েছেন, একটি পতাকা দিয়েছেন। সারা বিশ্বে তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের নেতা ছিলেন।’ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সমালোচনা করেন তারা বাঙালি কিনা সন্দেহ রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। এ অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় এই চক্র। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।’ কারও নাম উল্লেখ না করে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই বাংলাদেশে থেকে পাকিস্তানের চিন্তা-চেতনা বিশ্বাস করে তাদের এ দেশে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। সবার মনে রাখতে হবে কারও রক্তচক্ষু সহ্য করা হবে না। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করবেন না। এটা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে আরেকটা যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রেতাত্মাদের চিরতরে এই দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারকে হুমকি দেবেন না। এটা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। জোর করে ক্ষমতায় বসে যাওয়া কোনো সরকার নয়। দেশের জনগণ একবার জেগে গেলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।’ আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে হত্যার রাজনীতি শুরু। এরপর জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে যারা সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তাদের অনেককেই হত্যা করা হয়েছে, তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতা হলো ২১ আগস্ট। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীরা তাদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এবং বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা কনফেডারেশন করার চিন্তাভাবনা থেকে বার বার স্বাধীনতার সপক্ষের নেতৃত্বের ওপর আঘাত করছে।’ ষড়যন্ত্রকারীদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ক্যাপ্টেন তাজ বলেন, ‘অতীতে আইয়ুব খান ষড়যন্ত্র করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সফল হননি। পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র ভেদ করে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। একইভাবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেও কেউ সফল হবেন না। সব ষড়যন্ত্র ভেদ করে তিনি এগিয়ে যাবেন, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবেন।’

সর্বশেষ খবর