আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আদালতের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে তা কেবল অপ্রাসঙ্গিক ও অনভিপ্রেতই নয়, দুঃখজনক। অবিলম্বে পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এটা প্রত্যাহার করা না হলে দেশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার দায়ভার তাকেই (প্রধান বিচারপতি) নিতে হবে। এ বিষয়ে তার কোন ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাকেই তা বুঝতে হবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের সভাপতি শাবান মাহমুদ। এ ছাড়া আরও বক্তৃতা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসবিরুল হক অনু অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। আমির হোসেন আমু বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে দেওয়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে আদালতের ভূমিকাকে খাটো করা হয়েছে। কারণ তৎকালীন হাই কোর্টের বিচারপতি টিক্কা খানকে শপথ পড়াতে রাজি হননি। আর তাই ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে যে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে তা মুক্তিযুদ্ধে আদালতের ভূমিকাকে ম্লান করেছে। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে পাকিস্তানের সঙ্গে শিথিল কনফেডারেশন করার জন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণ করেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দেশকে নব্য পাকিস্তানে পরিণত করেছিলেন। আর তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করলে তাকে হত্যা করার জন্য ১৯ বার হামলা চালানো হয়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুর ভয়কে জয় করে আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের ভোটের ও ভাতের অধিকারই শুধু প্রতিষ্ঠা করেননি, তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের যেমন বিচার করেছেন তেমনি যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করেছেন। যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, রক্তস্নাত ১৫ আগস্ট ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনীকে আপনি বিতর্কিত করে তুলেছেন। জাতীয় সংসদ সদস্যদের নিয়েও আপনি মন্তব্য করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্ম যাতে জানতে না পারে আপনি সেই পথে হাঁটছেন একটি কুচক্রী মহলকে সঙ্গে নিয়ে।