নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার সরকারি কৌঁসুলি ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়েকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে জোর করে বিষজাতীয় কিছু একটা খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নাম মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তি। এ ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বিপরীতে একটি কোচিং সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রাপ্তি এ-লেভেলে পড়েন। ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘বাসার (হাজী মঞ্জিল) থেকে কাছেই একটি কোচিং সেন্টারে ক্লাস করতে যায় মাইশা। কোচিং শেষে চারতলা ওই কোচিং সেন্টারের নিচে নামার পর কয়েকজন ব্যক্তি তাকে বলে, ‘‘সাত খুনের মামলায় তোমার বাবা তো অনেক ভালো কাজ করেছেন। এ জন্য আমরা মিষ্টি খাওয়াতে এসেছি। এই নাও মিষ্টি খাও।” তখন মাইশা তাদের বলে, ‘‘চাচা, আমি বাইরে কিছু খাই না।’’ এর পরই তিনজন জোর করে বিষজাতীয় কিছু একটা তার মুখে পুরে দেয়। ঘটনার পর তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। জোর করে খাওয়ানোর পরই মাইশা আমাকে ফোন করে এসব কথা বলে। এর কিছুক্ষণ পরই সে অসুস্থ হয় পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’ ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধি জানান, রাত সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে। এরপর চিকিৎসকরা তার পাকস্থলী পরিষ্কার করেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সাত খুন মামলার সরকারি কৌঁসুলি ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়েকে মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ আমরা শুনেছি।’ এদিকে খবর পেয়ে রাত ৮টায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল শহরের হাজী মঞ্জিল কোচিং সেন্টার ও আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা রাস্তায় থাকা বিভিন্ন হকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। গুরুত্বের সঙ্গে পুলিশ বিষয়টিকে নিয়েছে। নাম প্রকাশ করার না শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পিপির মেয়ে প্রাপ্তি দুর্বৃত্তদের পালিয়ে যাওয়া গাড়ির শেষ অক্ষরের তিনটি নম্বর বলতে পেরেছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সাত খুন মামলায় হাই কোর্ট রায় দেয়। ওই মামলায় বিচারিক আদালতে সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন ওয়াজেদ আলী খোকন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে সাতজনকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল ছয়জনের ও পরদিন একজনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে।