বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভারতের নিরাপত্তার হুমকি রোহিঙ্গারা

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের নিরাপত্তার হুমকি রোহিঙ্গারা

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা একটা বড় হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। এ বিষয়টিকে অত্যন্ত শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীর সফরে গিয়ে রাজনাথ এসব কথা বলেন। জম্মুসহ ভারতের অন্য অংশে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টিতে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি এবং তা মোকাবিলা করতে কিছু দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ চার দিনের সফরের শেষ দিন গতকাল জম্মুতে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন রাজনাথ। দেশটির মুসলিম অধ্যুষিত এই রাজ্যে ছয় হাজারের বেশি রোহিঙ্গা অবৈধভাবে বসবাস করছে বলে জানা গেছে। আড়াই দশকেরও বেশি সময় ধরে এ রাজ্যটিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা কি হুমকির কারণ? এমন প্রশ্নে রাজনাথ বলেন, ‘আমরা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিতে পারি না।’ এর আগে আগস্টেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা দিয়েছিল যে রোহিঙ্গারা দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর হুমকি। কারণ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের নিয়োগ দিতে পারে। তাই রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির রাজ্য সরকারগুলোকেও নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিমত, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কারণে ভারতের নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের সীমিত সম্পদের ওপরও তা বোঝার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজুজ ফের স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, জম্মু-কাশ্মীর, হায়দরাবাদ, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থানসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় প্রায় ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী অবৈধভাবে বসবাস করছেন। রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশকারী তাই ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিহ্নিত করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। আর ভারতকে এ ব্যাপারে কারও উপদেশেরও দরকার নেই। কারণ ভারতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় উদ্বাস্তুরা রয়েছেন। এদিকে সহিংসতার শিকার হওয়ার হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের প্রতি কেন্দ্র ও বিজেপির মনোভাবের বিরোধিতা করেছে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেস। দলের সিনিয়র মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার। তাই তাদের সঙ্গে অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে আচরণ করা উচিত। কারণ বাংলাদেশ সরকারও এ কথাটি বলেছে। এ মুহূর্তে আমাদের সামনে যে সংকট ও সংবেদনশীলতা তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়টিতে ভারতের অত্যন্ত যত্নবান হওয়া উচিত।’

সর্বশেষ খবর