শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চাল নিয়ে হচ্ছেটা কী?

প্রধানমন্ত্রী বললেন, খাদ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না, বাণিজ্যমন্ত্রী জানালেন, ভারত রপ্তানি বন্ধ করেনি, চালবাজির কথা খাদ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাল নিয়ে হচ্ছেটা কী? উৎকণ্ঠা বিভিন্ন মহলে। খাদ্য সংকটের গুজব নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারা এসব গুজব ছড়িয়ে খেলছে? আগেও অনেকে মানুষকে নিয়ে খেলেছে। মানুষের খাদ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না। মানুষকে কষ্ট পেতে দেব না। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। চলতি মৌসুমে ২৭ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। প্রধানমন্ত্রী হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোথায় কেউ মজুদ রেখে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না তল্লাশি করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দেশবাসীর সহযোগিতা চাই— কারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে তাদের খুঁজে বের করে জানান। অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের ১৭তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করেনি। এটি একটি মহলের মিথ্যা প্রচারণা। একশ্রেণির চক্রান্তকারী টাকা দিয়ে এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।’ আর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘দেশে চালের কোনো ঘাটতি নেই। চাল নিয়ে চালবাজি ও রাজনীতি চলছে।’ কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা চাল নিয়ে চক্রান্ত, চালবাজি ও রাজনীতির কথা বললেও বাস্তবে বাজারে এখন প্রতিদিন চালের দাম বাড়ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, চালের বড় মোকাম হিসেবে পরিচিত নওগাঁ, কুষ্টিয়া, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। এর নেপথ্যে কুষ্টিয়ায় এক মিল মালিকের গুদামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা ও জরিমানা। অভিযোগ উঠেছে, ওই অভিযানের পর সরকারকে বিব্রত করতেই পরিকল্পিতভাবে চালের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করেনি : ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার খবর প্রচারের এক দিনের মাথায় গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করেনি। আমার জানা মতে, ভারতে এখনো কোটি টনেরও বেশি চাল বাড়তি আছে। কাজেই চাল রপ্তানি বন্ধ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। একশ্রেণির চক্রান্তকারী টাকা দিয়ে এ অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভারত আগামী তিন মাস চাল রপ্তানি করবে না এমন সংবাদ অসত্য। ভারত এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমি ভারতের হাইকমিশন ও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন সংবাদটি সত্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘চালের ইস্যুতে সরকার শক্ত অবস্থানে যাবে। চাল নিয়ে কেউ কারসাজি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সারা দেশে তল্লাশি করব। কোথায় কোথায় চাল মজুদ আছে তা খুঁজে বের করব। ইতিমধ্যেই ডিসিদের সেই নির্দেশ দিয়েছি।’ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সব সময় সুযোগ নেন। মিয়ানমার থেকে ৪ লাখ রোহিঙ্গা যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, সেটি সামলাতে সরকার যখন ব্যস্ত তখনই একটি মহল মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে চালের বাজার অস্থির করছে।’

চাল নিয়ে চলছে চালবাজি ও রাজনীতি : অন্যদিকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘চাল নিয়ে চালবাজি চলছে, রাজনীতি চলছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশেই ১ কোটি টন চাল আছে, এর পরও এই অবস্থা।’ খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি মজুদদার, আড়তদার, মিল মালিকসহ সবার প্রতি আহ্বান জানাব, এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যান। আপনারা যেভাবে (চালের) দাম বাড়াচ্ছেন, যেভাবে সিন্ডিকেট করে দেশে চালবাজি শুরু করেছেন তা কোনো অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না।’ তিনি বলেন, ‘এবার ১ কোটি ৯১ লাখ টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগবালাইয়ে দেশে ২০ লাখ টন ফসল নষ্ট হয়েছে। এর পর থেকে চালের বাজার অস্থির করতে একশ্রেণির ব্যবসায়ী ও মিল মালিক চাল নিয়ে চালবাজি করছেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে দিনে ৮৫ হাজার টন চাল লাগে। এই হিসাবে গত চার মাসে আমরা ১ কোটি ২ লাখ টন চাল খেয়েছি। আরও ১ কোটি টন চাল দেশে আছে। হয় মিল মালিক, আড়তদার, না হয় ছোট-বড় ব্যবসায়ী— কারও না কারও বাড়িতে এসব চাল আছে। এর পরও চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়ার পর বেসরকারিভাবে ভারত থেকে ৬ লাখ টন চাল এসেছে।’ এদিকে কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ধানের মূল্য বৃদ্ধি ও সংকটের অজুহাত দেখিয়ে দফায় দফায় চালের দাম বাড়ানোর অভিযোগে কুষ্টিয়ার খাজানগরে ভ্রাম্যমাণ আদালত সোমবার অভিযান চালায়। এতে সবচেয়ে বড় মিল রশীদ এগ্রো ফুড লিমিটেডকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদালত। এর পরপরই চালের দাম বাড়তে থাকে। ওই অভিযানের পর গত চার দিনে মিনিকেট চালের মূল্য কেজিপ্রতি প্রায় সাড়ে ৩ টাকা বেড়েছে। গতকাল খাজানগর মিল গেটে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। অথচ সোমবার এ চাল মিল গেটে বিক্রি হয়েছিল ৫৬ টাকা ৪০ পয়সা দরে।

গতকাল খাজানগর মোকাম ঘুরে জানা যায়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর মিনিকেট ছাড়াও ২৮, স্বর্ণাসহ সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে এখানকার চালকল মালিকরা দফায় দফায় চালের দাম বাড়িয়েই চলেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত দেড় মাসে খাজানগর মোকামে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে প্রায় ৯ টাকা বেড়েছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এখানকার মিল গেটে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৫১ টাকা, এখন তার দাম ৬০ টাকা ছাড়ানোর পথে। ২৮, স্বর্ণাসহ মোটা চালের দামও একই গতিতে বেড়েছে। জানা যায়, রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারে মিনিকেট চালের জোগান যায় খাজানগর মোকাম থেকে। এখানে ৩০টি স্বয়ংক্রিয় চালকল রয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে ১০০ ট্রাক অর্থাৎ ১ হাজার ৫০০ টন মিনিকেট চাল যায় সারা দেশের বাজারে। এর মধ্যে ৩০ ট্রাক চাল যায় বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি রশীদ এগ্রো ফুড লিমিটেডের মালিক আবদুর রশীদের চালকল থেকে। চালকল মালিকদের অজুহাত এখন বাজারে ধানের তীব্র সংকট, বাজারও চড়া। তাই চালের দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক ব্যাপার। এতে তাদের কোনো কারসাজি নেই। তবে সোমবার রশীদ এগ্রো ফুডের ১৩টি গুদামে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অনেক দিন আগে কেনা বিপুল পরিমাণ ধানের সন্ধান পায়। একটি সূত্র জানায়, এসব ধান অনেক কম মূল্যে কিনে গুদামজাত করা হয়েছে। এখন সেই ধান থেকে চাল তৈরি করে বাজারে চড়া মূল্যে ছাড়া হচ্ছে। খাজানগরের একজন চালকল মালিক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘ধানের সংকট দেখিয়ে চালের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে খাজানগরের বেশির ভাগ স্বয়ংক্রিয় চালকল মালিকের গুদামে বিপুল পরিমাণ ধান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘খাজানগরের শীর্ষ এক চালকল মালিক, নওগাঁ মোকামের দুজন শীর্ষ চালকল মালিকসহ দেশের ১০-১২ জন শীর্ষস্থানীয় চালকল মালিক মূলত চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে চালের মূল্য বৃদ্ধি ঠেকানো যাবে না।’ কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রবিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চালকল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছেন।’ নওগাঁ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দেশের সবচেয়ে বড় চালের মোকাম নওগাঁয় দিন দিন চালের দাম বেড়েই চলেছে। এতে সংকটে পড়ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জানা গেছে, গত সপ্তায় প্রতি কেজি নাজিরশাইল ছিল ৫৫, হাইব্রিড ৪০, জিরাশাইল ৫৬, মিনিকেট ৫৫, বিআর (২৮) ৫২, স্বর্ণা ৪৫, এলসি ৪৫ ও পারিজা ৪২ টাকা। আর চলতি সপ্তায় প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৬২, হাইব্রিড ৪৫, জিরাশাইল ৬০, মিনিকেট ৬০, বিআর (২৮) ৫৫, স্বর্ণা ৪৮, এলসি ৪৮ ও পারিজা ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, ‘হাওরাঞ্চলের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই দেশে পুনরায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের ঘরে ধান নেই। এসব কারণেই চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।’ নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদারের আশঙ্কা আগামীতে চালের বাজার আরও বৃদ্ধি পাবে। নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘বন্যা সামান্য প্রভাব ফেললেও বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।’ বেনাপোল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চালের বাজার অস্থিতিশীল করতে ভারতের একশ্রেণির অসাধু মহল একটি ভুয়া চিঠি বানিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছে বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে। এতে চাল ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন মহলে খোঁজ নিয়ে চাল রপ্তানি বন্ধের ওই চিঠির কোনো সত্যতা মেলেনি। অথচ এ খবর প্রকাশের পর বাজারে চালের মূল্য কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা করে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। অনেক আমদানিকারক বন্দর থেকে চাল খালাসের পর তা নিজস্ব গুদামে স্টক করতে শুরু করেছেন বেশি মুনাফার আশায়। বেনাপোলের আমদানিকারক আবদুস সামাদ জানান, ১১ সেপ্টেম্বর স্বর্ণা চাল ৪২ ও মিনিকেট ৪৯ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর স্বর্ণা ৪৩ ও মিনিকেট ৫১ এবং ১৩ সেপ্টেম্বর স্বর্ণা ৪৪.৫০ ও মিনিকেট ৫২.৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

যশোর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, যশোরেও অস্থির চালের বাজার। দাম বাড়ছে প্রতিদিনই। কোনো কোনো দিন দু-তিন বারও। গতকাল যশোরের বাজারে মোটা চাল খুচরা বিক্রি হয়েছে ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে; যা আগের দিন ছিল ৪৭ টাকায়। চাল ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান জানান, ২৮ চাল বুধবার বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়, গতকাল ৫৩ টাকায়। কাজললতা গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকায়, আগের দিন ৫০-৫১ টাকা।

 ইন্ডিয়ান ও দেশি মিনিকেট চালও এক থেকে দেড় টাকা বেড়ে গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫৫-৫৭ টাকায়। খলিলুর রহমান বলেন, ‘চালের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আটার দামও। বুধবার লুজ আটা ২৬ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এক দিনেই দাম বেড়ে হয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা।’ আরেক খুচরা ব্যবসায়ী বিনয় ঘোষ বলেন, ‘আমরা চাহিদা অনুযায়ী আড়ত থেকে চাল পাচ্ছি না। একটু সংকট মনে হচ্ছে। আড়তের লোকজন বলছেন তারাও চাল পাচ্ছেন না।’ যশোর বড় বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা সত্যকুণ্ড বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন চাল আনি, বিক্রি করি। প্রতিদিনই ৫০ পয়সা- ১ টাকা করে চালের দাম বাড়ছে। দাম বাড়ার কারণে চালের বিক্রিও কিছুটা কমে গেছে।’ যশোর শহরের সবচেয়ে বড় চাল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মুল্লুকচান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে যেভাবে চালের দাম বেড়েছে, সে তুলনায় গতকাল দাম বেড়েছে অনেক কম।’ তিনি বলেন, ‘৩০ বছর ধরে চালের ব্যবসা করছি, কিন্তু এবারের মতো অবস্থা কখনো দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘চালের ঘাটতি আছে, তবে এতটা নেই যে ঘণ্টায় ঘণ্টায় চালের দাম বাড়বে। তবে আজ (গতকাল) অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমদানিকারকরা আমাদের কাছে ফোন দিচ্ছেন চাল নেওয়ার জন্য।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর