শিরোনাম
রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন

প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক যাত্রা, কথা বলবেন রোহিঙ্গা নিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গতকাল দুপুরে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বিকালে তার নিউইয়র্ক পৌঁছানোর কথা। প্রধানমন্ত্রী ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। যথারীতি তিনি বাংলায় ভাষণ  দেবেন। ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকটের ‘মূল কারণগুলো’ তুলে ধরে তা নিরসনে বাংলাদেশের সুস্পষ্ট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সব রোহিঙ্গার নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়া যাবেন। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা গতকাল দুপুর ২টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে আবুধাবির পথে ঢাকা ত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন, আবুধাবিতে ট্রানজিট শেষে আজ রবিবার সকালে ইতিহাদের ফ্লাইটে নিউইয়র্ক রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। আজ বিকালে যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছানোর কথা। নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন। ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ প্রধানসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সফরসূচি অনুসারে, ২১ সেপ্টেম্বর সাধারণ অধিবেশনে ভাষণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত ‘জাতিসংঘ সংস্কার’ বিষয়ক এবং জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন অ্যান্ড অ্যাবিউজ’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। ‘গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ’ বিষয়ক এক ফলোআপ বৈঠকেও তার অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে ওই দিন। ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। অন্যান্য দেশের নেতারাও সেখানে থাকবেন। একই দিনে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের সভাপতিত্বে ‘উইমেন্স ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্ট ফর লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ওআইসি কনট্যাক্ট গ্রুপের বৈঠকে যোগ দেবেন। ওই দিন সন্ধ্যায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও কমনওয়েলথের বর্তমান চেয়ার-ইন অফিস মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাসকেট আয়োজিত কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। পরে ম্যাডিসন এভিনিউর প্যালেস হোটেলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। রাতে নিউইয়র্কের ম্যারিয়ট স্কয়ারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দফতরে পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ‘এসডিজি ইমপ্লিমেন্টেশন, ফাইন্যান্সিং অ্যান্ড মনিটরিং : শেয়ারিং ইনোভেশনস থ্রু সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রাইয়াঙ্গুলার কো-অপারেশন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন। ইউএনডিপি ও ইউএন অফিসের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। একই দিনে ‘ক্রিয়েটিং এ পলিসি ভিশন ফর এসডিজি ফাইন্যান্স : ফ্যাসিলিটেটিং প্রাইভেট সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য এসডিজিস শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। পরে বিজনেস কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং (বিসিআইইউ) আয়োজিত এক মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেবেন।

 জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে ইথিওপিয়ার প্রতিনিধি দল আয়োজিত একটি উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত আলোচনায়ও সেদিন যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে পানিবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের একটি প্যানেলের চতুর্থ বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন। সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। সেদিন সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এই সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ খবর