সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

অনিয়ম-দুর্নীতি বড় বাধা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনিয়ম-দুর্নীতি বড় বাধা

জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি অর্জনে অনিয়ম ও দুর্নীতি বাংলাদেশের বড় বাধা বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ—টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, এসডিজি অর্জনে সন্তোষজনক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর পাশাপাশি সক্ষমতা ও প্রস্তুতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সঠিক পথে আছে।  গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। টিআইবি পরিচালিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ১৬ : দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যের ওপর বাংলাদেশের প্রস্তুতি, বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণায় এই পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।

সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল বলেন, এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে নানামুখী পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও, বিভিন্ন জরিপ ও তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে এর সুফল সব ক্ষেত্রে জনগণ পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য সব পরিকল্পনা, কার্যক্রম ও কর্মসূচিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সার্বিকভাবে এসডিজি-১৬ এর লক্ষ্যসমূহ পূরণে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সন্তোষজনক প্রস্তুতি ও সক্ষমতা আছে। তবে বিদ্যমান ঘাটতিসমূহ বিবেচনায় বাস্তবায়ন অবকাঠামো ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে উদ্বেগের বিষয়গুলো নিরসনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও চুরি যাওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে নিয়ন্ত্রক ও তদারকি প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতার ঘাটতি, সব পর্যায়ে দুর্নীতির বিস্তার রোধে প্রত্যাশিত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রমের অভাব এবং দলীয় রাজনীতির প্রভাবে অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশিত পর্যায়ে কার্যকারিতা না থাকা উল্লেখযোগ্য।

টিআইবির ওই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিভিন্ন উদ্যোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশে দুর্নীতি ও ঘুষ, অর্থ পাচার, মৌলিক স্বাধীনতার ব্যত্যয় ও মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই জনগণের কাছে জবাবদিহিতার কোনো কাঠামো নেই। এসডিজির বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য ২৪১টি সূচকের মধ্যে সরকারের কাছে ৭০টি সূচকের ওপর সম্পূর্ণ এবং ১০৮টি সূচকের ওপর আংশিক তথ্য রয়েছে। ৬৩টি সূচকের ওপর সরকারি কোনো তথ্য নেই। তবে গবেষণায় সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৬ সালে প্রাপ্ত ১২ হাজার ৫৬৮টি অভিযোগের মধ্যে ১ হাজার ৫৪৩টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয় এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ে ৫৪৩টি অভিযোগ প্রেরণ করা হয়। এর আগে প্রতি বছর গড়ে ১ হাজার ২০টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হতো। ২০১৬ সালে ৩৫৯টি অবৈধ উপায়ে সুবিধা লাভ সংক্রান্ত মামলা নথিভুক্ত করার পাশাপাশি ঘুষ নেওয়ার জন্য ১৩ জনকে আটক ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণসহ অবৈধ উপায়ে সুবিধা লাভ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় ৩৮৮ জনকে আটক করা হয়। এ ছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ জানানোর জন্য দুদক কর্তৃক সম্প্রতি হটলাইন চালু করা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর