মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বাধীন আরাকানের দাবিতে হেফাজত

কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা স্মারকলিপি পেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গতকাল ঢাকা মহানগরী হেফাজতে ইসলামের মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে বিশাল মিছিল শান্তিনগর এলাকায় পৌঁছলে আটকে দেয় পুলিশ। পরে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হত্যা-নির্যাতন বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি মিয়ানমার দূতাবাসে পৌঁছে দেয়। এর আগে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় হেফাজত নেতারা স্বাধীন আরাকান প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

সংগঠনের ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আতাউল্লাহ প্রমুখ। বেলা ১১টা থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক, ঢাকা মহানগরী নেতা মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা হামিদুল্লাহ, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা মজিবুর রহমান, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা আহমদুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা শেখ গোলাম আজগর, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা আজীজুর রহমান হেলাল প্রমুখ। নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে নিরীহ রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর যে নির্মম গণহত্যা চলছে তা ইতিহাসের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই গণহত্যার ধিক্কারের পরও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নিষ্ঠুরতা বন্ধ করেনি। তাই সরকারকে কূটনৈতিকভাবে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’ মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, ‘গণহত্যা বন্ধ না হলে আরাকান স্বাধীন করতে জিহাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’ মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘সরকারকে মিয়ানমার দূতাবাস বন্ধ করে দিতে হবে।’ মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী বলেন, ‘সরকারের অনুমতি পেলে আরাকান স্বাধীন করতে জিহাদে যেতে প্রস্তুত।’ মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘সন্ত্রাসী পিতার সন্ত্রাসী মেয়েই হচ্ছেন অং সান সু চি, তার পিতাও রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলেছেন।’ এদিকে মিয়ানমারে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে বর্বরোচিত হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ নির্মমতা চলছে। বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশসহ সব মুসলিম রাষ্ট্র ও মানবতাবাদী সংস্থার জন্য এটি লজ্জার।’ গোপালগঞ্জের পৌর পার্ক ময়দানে গতকাল এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। মুফতি শোয়াইব ইবরাহিম ও মুফতি মাকসুদুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন মাওলানা শামসুল হক প্রমুখ। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিকালে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ফ্রন্ট ঢাকা মহানগরী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল হাকিমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাংগঠনিক সচিব আ ন ম মাসউদ হুসাইন আলকাদেরী। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের ঘটনা দেরিতে হলেও বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। এ নৃশংসতা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার জন্য বাংলাদেশকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

সর্বশেষ খবর