যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়োজনে জাতিসংঘ সংস্কার বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের সভায় অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘হাই লেভেল মিটিং অন ইউএন রিফর্ম’ শীর্ষক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ সংস্কার নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আমলাতন্ত্র ও অব্যবস্থাপনার কারণে জাতিসংঘের সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশ ঘটছে না। খবর বিডিনিউজ।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে যোগ দিতে শেখ হাসিনা এখন নিউইয়র্কে। তিনি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পক্ষে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন, যেখানে রোহিঙ্গা সঙ্কট আলোচিত হবে।এদিকে নিউইয়র্ক থেকে এনআরবি নিউজ জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেএফকে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ও প্রবাসীরা করতালি আর স্লোগানে স্লোগানে স্বাগত জানিয়েছেন। জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে টানা নবম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক গেলেন। ইতিহাদ এয়ারলাইনসের একটি বিমানে তিনি গত রবিবার বিকালে জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনসহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। এ সময় স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি সবার কুশলাদিও জানতে চান। শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে পৌঁছার পর ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য গ্লোবাল পিস—শেখ হাসিনা’, চ্যাম্পিয়ন অব আর্থ শেখ হাসিনা’, ‘চ্যাম্পিয়ন অব হিউম্যান রাইটস-শেখ হাসিনা’, ‘মাদার অব হিউম্যানিটি-শেখ হাসিনা ওয়েলকাম’, ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘বিশ্বশান্তির অগ্রদূত-শেখ হাসিনা’ দলীয় নেতা-কর্মীদের ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জেএফকে বিমানবন্দর। পরে তিনি ম্যানহাটানে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে উঠেন। ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই হোটেলে অবস্থান করেই তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেবেন। হোটেল লবিতে শেখ হাসিনাকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্দ। ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুর থেকে অপরাহ্ন সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জেএফকে বিমানবন্দরের চার নম্বর টার্মিনাল ছিল প্রবাসীদের দখলে। শত শত প্রবাসীর হাতে ছিল শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানোর প্লেকার্ড-পোস্টার-ব্যানার। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ প্রভৃতি সংগঠনের ব্যানারে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত নারী-পুরুষেরা। আগের মতো এবারও বিএনপির পক্ষ থেকে জেএফকে এয়ারপোর্টে শেখ হাসিনাকে কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। ২৫-৩০ জনের মতো জড়ো হয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন বিশ্ব-মানবতার নেতায় পরিণত হয়েছেন। মার্কিন প্রশাসনও এখন তাকে বিশেষভাবে বিবেচনা করছে।
দল-নিরপেক্ষ বিপুলসংখ্যক প্রবাসীর উপস্থিতির কারণেই বিএনপি পাততাড়ি গুটিয়েছে। এটি শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের বিজয়।’ জেএফকে এয়ারপোর্টে শেখ হাসিনাকে স্বাগত-সমাবেশে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, জনতার জোয়ার দেখে বিএনপি-জামায়াতিরা উধাও হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অধ্যাপক দেলোয়ার-গিয়াস গ্রুপের কেউই জেএফকে এয়ারপোর্টে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেননি। এদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বাবু-মিল্টন-জসীম গ্রুপ শেখ হাসিনাকে কালো পতাকা প্রদর্শনসহ বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। কমিটি নিয়ে নেতা-কর্মীরা প্রচণ্ড হতাশায় রয়েছেন। তবে অধ্যাপক দেলোয়ার-গিয়াস গ্রুপের পক্ষ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে শেখ হাসিনার বক্তব্যের সময় এ বিক্ষোভ দেখাবে বিএনপি, যুবদল, তারেক পরিষদ, জাসাসের নেতা-কর্মীরা।