রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীন যাতে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে না পারে সে জন্য সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খতে হবে শুধু নয়, আরও জোরদার করতে হবে। যাতে করে চীন-রাশিয়া তাদের ভেটো দেওয়া বন্ধ করতে পারে এবং এই মানুষদের পাশে এসে সবাই দাঁড়াতে পারে। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, রোহিঙ্গারা যারা এসেছে তাদের এখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের কথা আমরা বলিনি। আমরা বলেছি সাময়িকভাবে তাদের আশ্রয় দিতে হবে, মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, একই সঙ্গে রোহিঙ্গারা যাতে করে নাগরিকত্ব নিয়ে নিজ বাসভূমিতে ফিরে যেতে পারে সে ব্যবস্থা অবশ্যই সরকারকে করতে হবে এবং দ্রুততার সঙ্গে তা করতে হবে। অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করার জন্য আমরা প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলাম। তারা দায়িত্ব গ্রহণের পর ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। আমরা বলতে চাই, এই কর্মকাণ্ডে জনবল বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য সেবা বৃদ্ধি করতে এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য অস্থায়ী ঘর-বাড়ি তৈরি করতে হবে। এ সময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মাহবুবুর রহমান শামীম, কামরুজ্জামান রতন, লুত্ফর রহমান কাজল, শরীফুল আলম, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার, শেখ শামীম, উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেলসহ অঙ্গসংগঠন ও জেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিএনপি মহাসচিব উখিয়ার বাগগুনা, বালুখালী ও থাইমখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। এর মধ্যে ছিল ত্রিপল, জামা-কাপড়, হাড়ি-পাতিল, খাদ্য সামগ্রী, ওষুধপত্র, টিউবওয়েল প্রভৃতি। বিএনপি মহাসচিব ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাবের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন। এরপর সন্ধ্যায় দলের এক কর্মী সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা প্রথম থেকেই অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি, আমাদের নেতা-কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। সরকারকে ওই সময় বার বার বলেছি এই মানবিক বিপর্যয় রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে। বিশ্বমত যখন সৃষ্টি হয়েছে তখন সরকার সক্রিয় হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে মঙ্গলবার বিকালে বিমানযোগে কক্সবাজার পৌঁছান বিএনপি মহাসচিব। গতকাল সকালে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে সেনাবাহিনীর ত্রাণ ভাণ্ডারে দুই ট্রাক ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর করেন মির্জা ফখরুল। ক্যাম্পের কর্মকর্তা মেজর রাশেদ এসব ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করেন।