শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শাস্তি দিয়ে অপরাধীদের ছবি ছাপা উচিত

--------- সালমা আলী

শাস্তি দিয়ে অপরাধীদের ছবি ছাপা উচিত

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের হত্যার নৃশংস ছবি প্রকাশ করা উচিত নয়। আমাদের শৈশব থেকে এই নির্মম ঘটনাগুলোর আগ পর্যন্ত এভাবে মানুষকে পিটিয়ে মারতে আর দেখিনি। বরং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সেই ছবি প্রকাশ করা উচিত। এতে করে অন্য যারা এ ধরনের নির্যাতন করেন, তাদের মনে ভয় ঢুকবে, নিজেদের ভুল তারা শুধরে নেবে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব বলেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি সাগর ও রাজনদের এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য সুশাসনের অভাব দায়ী। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে আসামিদের বিচারের আওতায় আনতে না পারায় তারা পার পেয়ে যায়। অপরাধীরা রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থের জোরে অপরাধ করেও তা ঢাকা দিচ্ছে। সালমা আলী মনে করেন, ময়মনসিংহে নির্মমতার শিকার কিশোরটিকে নির্যাতন করার সময় যারা আশপাশে দাঁড়িয়ে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্যটি মোবাইল ফোনের ভিডিওতে ধারণ করেছেন, তারা চাইলেই কিশোরটিকে বাঁচাতে পারতেন। সে হিসেবে এই মানুষগুলোও কিশোরটির হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারেন না। এই মানুষগুলো ভিডিও করার বদলে যদি কিশোরটিকে বাঁচানোর জন্য সোচ্চার হতেন তাহলেই সাগর আজ বেঁচে থাকত। তিনি বলেন, শিশু রাজনের হত্যাকাণ্ডের যে বীভৎসতা আমরা দেখেছি তা এখন মানুষের কাছে সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই আইনজীবী বলেন, আমাদের সমাজে নিম্ন আয়ের পরিবারে সন্তানের বয়স ১৪-১৫ হলেই ধরে নেওয়া হয় যে, ছেলে এখন বড় হয়ে গেছে। কিন্তু এই শিশুদের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার জন্য যে পারিবারিক বলয়ের প্রয়োজন তা এই পরিবারের অভিভাবকরা সন্তানদের দিতে পারছেন না। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সিটি করপোরেশন এলাকায় এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে। নিম্ন আয়ের লোকেরা যেখানে বসবাস করেন সেখানে জনবসতি বেশি হওয়ায় শিশুবান্ধব পরিবেশ পাওয়া যায় না। এতে শৈশবেই অনেক শিশু অপরাধ করে কিংবা এলাকার বড় অপরাধীদের সঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। এজন্য এই শিশুদের দিকে আমাদের সবাইরই বিশেষ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। সালমা আলীর মতে, প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে বা ঘরেই এমন আরও অনেক শিশু নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর যারা এই নির্যাতন করছেন তারা বিকৃত মানসিকতার। সমাজে থাকা এই বিকৃত মানুষগুলো এবং তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত খোঁজ নিতে হবে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থাও নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর