রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় মিছিল সমাবেশ

ছিল দিনভর যানজটও

নিজস্ব প্রতিবেদক

সকাল সাড়ে ৯টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত গণসংবর্ধনার আয়োজন থাকলেও সকাল ৭টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড-থানা থেকে মিছিল শুরু হয়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগসহ মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মহানগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সমবেত হতে থাকেন বিমানবন্দর থেকে গণভবনের রাস্তায়। এ মিছিল-সমাবেশের স্রোত সকাল গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত ছিল রাজধানীজুড়ে। এর ফলে কিছু এলাকায় দিনভর ছিল যানজট। যদিও যানজট এড়াতে  আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশনা ছিল রাস্তার মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মিছিল করা যাবে না। ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন ওলি-গলি পাড়া-মহল্লা থেকে নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। সাড়ে ৮টার মধ্যেই রাস্তার দুই ধারে সমাবেত হন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আবুল হাসনাত ও শাহে আলম মুরাদের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, এ কে এম রহতমউল্লাহ ও সাদেক খানের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ মিছিল নিয়ে এসে র্যাংগস ভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত অবস্থান নেয়। যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয়, মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর ব্যাপক শোডাউন করে। গায়ে সবুজ গেঞ্জি, মাথায় সবুজ টুপি, সংগঠনের পতাকা নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের নেতৃত্বে গুলিস্তান থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী বিশাল মিছিল নিয়ে এসে বিজয় সরণির মোড় থেকে গণভবন পর্যন্ত অবস্থান নেয়। প্রধানমন্ত্রী এ এলাকা অতিক্রমের সময় পতাকা নেড়ে তাকে অভিবাদন জানানোর দৃশ্য সবার দৃষ্টি কাড়ে। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে জাহাঙ্গীর গেটে অবস্থান নেয়। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল জাহাঙ্গীর গেট থেকে মহাখালী পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এ ছাড়াও ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন এবং ছাত্রলীগ দক্ষিণের সভাপতি বায়েজিত আহমেদ খান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল র্যাংগস ভবন থেকে জাহাঙ্গীর গেটে অবস্থান নেয়। এ ছাড়া শফিকুল বাহার মজুমদার টিপুর নেতৃত্বে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি মিছিলও ছিল উল্লেখ করার মতো। ঢাকা মহানগরের ১৫টি নির্বাচনী আসন এবং ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকেও হাজার হাজার মানুষের মিছিল যোগ দেয় জনসভায়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে আসা সুবিশাল বর্ণাঢ্য মিছিল সবার নজর কাড়ে। মানুষের বিশাল সমাগম হওয়ার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে উত্তরা, কুড়িল, মহাখালী, শাহবাগ, বাংলামোটর, পল্টন, গুলিস্তানে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল ১০টায় বিমানবন্দর এলাকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলে যানজট সৃষ্টি হয় উত্তরা পর্যন্ত। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী সাড়ে ১০টায় বের হওয়ার কিছু পর যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলেও যানজটের ধকল পোহাতে হয় দীর্ঘ সময়। রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত রাস্তায় যানবাহন ছিল কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে। বনানী থেকে বিজয়নগর হয়ে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে নেতা-কর্মীদের অবস্থানের কারণে এসব এলাকায়ও রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর গণভবনে প্রবেশের পর রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু হাজার হাজার মানুষ ছিল রাস্তায়। যানবাহন চলাচলের গতি আসতে সময় পার হয়ে যায় দুপুর ১টা। ফলে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধের দিনেও ঢাকায় ছিল ভয়াবহ যানজট।

সর্বশেষ খবর