বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
জাতিসংঘের প্রতিবেদন

রোহিঙ্গাদের স্থায়ী বিতাড়নের চেষ্টা

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তারা রোহিঙ্গাদের সে দেশ থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়নের চেষ্টা করছে। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম ও পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের গ্রাম ও ফসলের জমি এমনভাবে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে যাতে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীরা আর কোনো দিন সেখানে ফিরতে না পারে। খবর বিবিসি বাংলার।

এ রিপোর্টে জাতিসংঘ থেকে আরও বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর সমন্বিত হামলা শুরু হয় ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা পুলিশ ফাঁড়ির ওপর হামলা চালানোরও আগে। রাখাইন থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৬০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘের কর্মীরা। এ প্রতিবেদনে তাদের দেওয়া তথ্যও সংকলিত হয়েছে। মিয়ানমার সরকার শুরু থেকেই বলে আসছিল যে, গত ২৫ আগস্ট আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির যে হামলা, তার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবেই তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। কিন্তু এ রিপোর্টে পুরোপুরি তার উল্টো কথা বলা হয়েছে। ফলে জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর যে কেবল মিয়ানমার সরকারের এ দাবিকে অসত্য বলছে শুধু তাই নয়— তারা বলেছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যেভাবে এই পুরো অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে, তাতে তাদের মনে হয়েছে— এটি ছিল একেবারে পূর্ব পরিকল্পিত। যেমন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল ২৫ আগস্ট। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছিল। সেখানে ২৫ আগস্টের আগে থেকেই ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী রোহিঙ্গা পুরুষদের পাইকারি হারে আটক করা হচ্ছিল। রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয়ভাবে নেতৃস্থানীয়, তাদের আটক করা হচ্ছিল। পুরো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নানাভাবে নির্যাতন, হয়রানি, ভয়ভীতি দেখানোর মাধ্যমে একটা চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। আর ২৫ আগস্টে আরসার কথিত হামলার পর সেনাবাহিনী তাদের ভাষায় যে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন বা শুদ্ধি অভিযান শুরু করে, সেটি এত সুসংগঠিত, সমন্বিত এবং ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হয়েছে যে, সেটি দেখেও জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের মনে হয়েছে— এটি ছিল একেবারে আগে থেকে পরিকল্পনা করে করা। যেভাবে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো ধ্বংস করা হয়েছে, সেটা মনে হয়নি কোনো অভিযান পরিচালনার সময় সংঘাতের কারণে ধ্বংস হয়েছে।

সর্বশেষ খবর