শিরোনাম
সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন বাংলাদেশের ক্ষমতার বাইরে

বাদল নূর

রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন বাংলাদেশের ক্ষমতার বাইরে

বিমল বিশ্বাস

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মানব জাতির সম্পদ। তাদের নিজ জন্মভূমিতে সম্মানজনকভাবে মিয়ানমার সরকারকেই ফিরিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সব ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ রাখতে হবে। সরকার মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। তবে এত চাপ সহ্য করা বাংলাদেশের ক্ষমতার বাইরে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসে প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বিমল বিশ্বাস বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তান আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠার নামে ইসলামী লেবাসে ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ দখল এবং বঙ্গোপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি করার পরিকল্পনা করছে। আর ভারতীয় শাসকগোষ্ঠী গ্রহণ করেছে দ্বৈতনীতি। মিয়ানমারের সু চি সরকার যেভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে তা বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দফা সুপারিশ বাস্তবায়িত করার জন্য জাতিসংঘে যে বক্তব্য রেখেছেন তা বাস্তবায়িত  করলেই এ সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে। প্রবীণ রাজনীতিক ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস বলেন, বিস্তারিত না বলে এ কথা বলতে পারি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ শক্তির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের লীলাক্ষেত্র হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত এবং হেফাজতে ইসলামসহ যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের আদর্শিক রাখিবন্ধন বাংলাদেশের জন্য আদর্শিক ও রাজনৈতিক বিপদ। একে মোকাবিলা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সমঝোতার যে বিপজ্জনক কৌশল তাতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে রক্ষা করা দুরূহ হবে। তিনি বলেন, দৈনিক ইত্তেফাকের একটি রিপোর্টে জানা গেছে, জামায়াত ও ইমলামী ছাত্রশিবিরের ৯০ হাজার সদস্য আওয়ামী লীগে যোগদান  করেছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ করতে দিতে হবে। এটি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সেক্ষেত্রে রয়েছে নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা। সরকার পরিবর্তনে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দেশি-বিদেশি কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী নানা ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চলছে, তা পরিবর্তনের জন্য আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ জরুরি। দেশে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যেসব আইন রয়েছে তা কার্যকর করলে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র অনেকখানি এগিয়ে নেওয়া যায়। বিমল বিশ্বাস বলেন, ১৪ দলের ২৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলে নতুন জোট গঠনের তেমন কোনো ক্ষেত্র থাকবে বলে মনে হয় না। এই জোট প্রধানত টিকে থাকবে কি থাকবে না তা নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের ওপর।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে যেসব অর্থনৈতিক সংস্কার করছে তা বর্তমান সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক বলতে হবে। যদিও দুর্নীতি ও ক্ষেত্রবিশেষে দলীয়করণ সরকারের অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে। দেশের ৯৫ ভাগ মানুষের জীবন ধারণের প্রয়োজনে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। কিন্তু এই সরকারের কোনো অর্জন নেই বলে যারা রাজনীতি করছেন তা সত্যের অপলাপ।

সর্বশেষ খবর