মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভায় ধন্যবাদ

যুদ্ধ নয়, আলোচনায় সমাধান : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের সদস্যভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে যেমন অত্যাচার করেছিল, মিয়ানমারের এই বাস্তুচ্যুত নাগরিকরাও তাদের দেশে সে রকম অত্যাচারের শিকার। ওই সময় তিন কোটি বাঙালি গৃহহারা হয়েছিল, আর শরণার্থী হয়েছিল এক কোটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরাও শরণার্থী ছিলাম, এদের দুঃখ আমরা বুঝি। মিয়ানমার থেকে আসা মানুষ যে দুর্দশায় পড়েছে, এই অবস্থায় তাদের পাশে না দাঁড়ালে সেটা অমানবিক হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষের মানবিক গুণ আছে। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সাহায্য নিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবকরা সেখানে কাজ করছেন জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও রোহিঙ্গাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ : জাতিসংঘে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সাহসিকতার সঙ্গে পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরায় এবং সাহসী ভূমিকা পালন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। ধন্যবাদ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। বৈঠকে শেখ হাসিনার ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ উপাধি পাওয়ায় বিষয়টিও উঠে আসে। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে যে প্রস্তাব দিয়েছেন এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবতার কাজ করেছেন সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের মানুষের মনে নাড়া দিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সারা বিশ্বের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রশংসা করে ‘এডিটোরিয়াল’ লিখছে। এটা কম পাওয়া নয়। মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য তার যে মানবতা এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। আলোচনার একপর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান তার নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করে শোনান। এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি আইন, ২০১৭ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ ও তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে অর্থ ব্যয় করার বিধান রেখে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি-২০১৭’-এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সর্বশেষ খবর