বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
খালেদার ফেরা নিয়ে উত্তেজনা

শোডাউনের প্রস্তুতি বিএনপির কাল আত্মসমর্পণ আদালতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

শোডাউনের প্রস্তুতি বিএনপির কাল আত্মসমর্পণ আদালতে

দীর্ঘ তিন মাস লন্ডন সফর শেষে আজ দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে (ইকে-৫৮৬) বিকাল ৫ টা ২০ মিনিটে তার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছার কথা। বিএনপি দলের প্রধানের          ফেরা উপলক্ষে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা থাকবেন সেই শোডাউনে। এরই মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো প্রস্তুতি সভা করেছে। বেগম জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আসবেন ঢাকার আশপাশের জেলার নেতা-কর্মীরাও। তিনি আগামীকাল ঢাকার বকশীবাজারে বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদিকে গতকাল রাতে লন্ডনে হিথ্রো বিমানবন্দরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদায় জানান তার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান, মেয়ে জায়মা রহমান, আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি ও তার দুই সন্তান। এ ছাড়াও লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মী বিমানবন্দরে ছুটে আসেন। এ প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘আমাদের চেয়ারপারসন আগামীকাল সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিটে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন বলে আমরা আশা করছি। সেখানে আমরা তাকে স্বাগত জানাতে যাব। বিএনপি নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আশা করছি, সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা পাব।’ বেগম জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে চেয়ারপারসনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার চেয়ারপারসন বিশেষ আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইবেন। এরই মধ্যে আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’ চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বহন করা বিমানটি দুবাই এসে যাত্রাবিরতি করবে। এরপর তিনি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন বিকাল সোয়া ৫টার দিকে। সেখান থেকে সরাসরি বাসায় যাবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।’ জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। প্রথম  গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ আসে কুমিল্লার একটি আদালত থেকে। বাসে অগ্নিসংযোগের ফলে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দায়ের করা একটি মামলায় এই গ্রেফতারি পরোয়ানা। পরে ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ থেকে জিয়া চ্যারিট্যাবল ও জিয়া আরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পৃথক দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। একই দিনে জাতীয় পতাকা ও মানচিত্র অবমাননার মামলার শুনানিতে উপস্থিত না থাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুর নবী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই সঙ্গে গ্রেফতারের অগ্রগতি সম্পর্কে আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় আদালত। এই  গ্রেফতারি পরোয়ানা ইতিমধ্যে গুলশান থানায় পৌঁছে গেছে বলে জানা গেছে। প্রতিটি গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রদানের আদালতে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে বেগম খালেদা জিয়াকে। জামিনের জন্য কুমিল্লার আদালতেও যেতে হবে তাকে। দীর্ঘ সময় লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন চোখ ও পায়ের চিকিৎসা ছাড়াও দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়ন নিয়েও মা ছেলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেখানে অবস্থানকালে ভারতসহ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করার খবর পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুলাই চোখ ও পায়ের চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন যুক্তরাজ্য যান। লন্ডনে খালেদা জিয়া তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেন। ৮ আগস্ট লন্ডনের মুরফিল্ড হাসপাতালে তার ডান চোখের সফল অস্ত্রোপচার হয়। এরপর সেখানে পায়ের চিকিৎসাও করান তিনি।

সর্বশেষ খবর