বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
জিয়া এরশাদ খালেদার আমল

মেয়াদপূর্তির আগেই বিচারপতি অপসারণ বিভিন্ন সময়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে অস্বাভাবিকভাবে অপসারণ করা হয়েছে চারজন বিচারপতিকে। ঘোষণাদেশের মাধ্যমে একজনের মেয়াদকাল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে অপসারণ করা হয়েছে ১০ জন বিচারপতিকে। আর ১২ জনকে স্থায়ী নিয়োগ না দেওয়ায় তারা আপিল বিভাগের রায়ে স্থায়ী হয়েছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়,  জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালের ৩ মার্চ অস্বাভাবিকভাবে অপসারণ করা হয় বিচারপতি সিদ্দিক আহম্মেদ চৌধুরী ও বিচারপতি আবদুল মমিত চৌধুরীকে। ১৯৮২ সালে এরশাদ শাসনামলে বিচারপতি আবুল ফজল মোহাম্মদ আহসান উদ্দিন চৌধুরী যখন রাষ্ট্রপতি তখন ওই বছরের ১১ এপ্রিল ঘোষণাদেশের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেনের মেয়াদ কমিয়ে দিয়ে তাকে অপসারণ করা হয়। স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে ১৯৮৫ সালের ১৪ জুলাই বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল মোতালিব এবং ১৯৮৬ সালের ২৯ মে তারিখে বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাবকে অপসারণ করা হয়। বিচারপতিদের অপসারণ এবং চাকরিতে স্থায়ী নিয়োগ না দেওয়ার এই ধারাবাহিকতা ছিল খালেদা জিয়ার শাসনামলের দুই মেয়াদেই। সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক বছর পর স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে ১৯৯২ সালের ২৮ জানুয়ারি চাকরি থেকে অপসারণ করা হয় বিচারপতি আবদুল হাসিবকে। খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাতজন বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে অপসারণ করা হয়। আর ১১ জন বিচারপতি স্থায়ী নিয়োগ না পেয়ে আপিল করলে তাদের পক্ষে রায় আসে এবং তারা স্থায়ী নিয়োগ পান। খালেদা জিয়ার আমলের একজন বিচারপতিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে অপসারণ করা হয়। সূত্র জানায়, স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে ২০০২ সালের ২৭ মে তারিখে অপসারণ করা হয় বিচারপতি এন কে চক্রবর্তী, বিচারপতি এ এ এম সফিউদ্দিন, বিচারপতি এ এফ এম মেজবাহউদ্দিন ও বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরীকে। ২০০৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে অপসারিত হন আবদুস সালাম মামুন, ২০০৬ সালের ২২ আগস্টে অপসারিত হন বিচারপতি নির্মলেন্দু ধর ও বিচারপতি এ বি এম হাতেম আলী। স্থায়ী নিয়োগ না পেয়ে ২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন ১১ জন বিচারপতি। আপিলের রায় নিজেদের পক্ষে আসায় তাদের প্রত্যেকের চাকরি স্থায়ী হয়। এদের মধ্যে ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর অপসারিত হওয়া বিচারপতি মো. আবদুস সালাম, বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন, ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি অপসারিত হওয়া বিচারপতি মো. আবদুল হাই, বিচারপতি ফারুক আহমেদ, বিচারপতি মো. মারজিউল হক, বিচারপতি মো. সামসুল হুদা ও বিচারপতি মো. আবদুর রাজ্জাক, ২০০৩ সালের ৩ জুলাই অপসারিত হওয়া বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি মো. নিজামুল হকের চাকরি ২০০৩ সালের ২৫ মার্চ তারিখে স্থায়ী হয়। আর ২০০৩ সালের ৩ মে অপসারিত বিচারপতি বজলুর রহমানের চাকরি স্থায়ী ২০০৯ সালের ১০ মে তারিখে। খালেদা জিয়ার শাসনামলেই ২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে অপসারণ করা হয় বিচারপতি সৈয়দ সহিদ-উর-রহমানকে।

সর্বশেষ খবর