বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঘুরেফিরে সেই একই চিত্র টাইগারদের

মেজবাহ্-উল-হক

ঘুরেফিরে সেই একই চিত্র। আবারও বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। টাইগারদের ১০৪ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ  নিশ্চিত করল দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল পার্লের বোল্যান্ড পাকে এবি ডি ভিয়ায়ার্সের তাণ্ডবীয় ব্যাটিংয়ে ৩৫৩ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাহাড় টপকাতে নেমে ২৪৪ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করেছিলেন ‘মিস্টার ডিপেনডেবল’ মুশফিক। গতকালও দারুণ খেলে হাফ সেঞ্চুরি আদায় করে নিয়েছিলেন।  কিন্তু যখন মুশফিকের ব্যাটে জয়ের ‘দুঃস্বপ্ন’ উঁকি দিচ্ছিল তখনই সর্বনাশ হয়ে গেল! উইকেট উপহার দিয়ে মাথা নিচু করে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করেছেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। একবার নতুন জীবন পেয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন। কিন্তু তারও ইনিংসটা আটকে গেল ৬৮ রানে। তুলে দেন সহজ ক্যাচ। হাফ সেঞ্চুরি করা দুই ব্যাটসম্যানের এমন আউটই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। ইমরুল ও মুশফিকের মাঝে ক্ষণিকের জন্য ২২ গজে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। অসি স্পিনার ইমরান তাহিরের ভয়ঙ্কর ডেলিভারিতে ৫ রানেই ফিরতে হয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে।

একসময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১৬২ রান। সেখান থেকে হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১৮৫ রান। ২৩ রানের মধ্যে তিন তারকা ব্যাটসম্যান সাকিব, মুশফিক ও ইমরুলকে হারিয়ে খাদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সেখানেই আটকে যান মাশরাফিরা।

 গতকাল বাংলাদেশের বোলারদের ওপর যেন রীতিমতো স্টিম রোলার চালিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। মাত্র ১০৪ বলে খেলেছেন ১৭৬ রানের সাইক্লোন ইনিংস। ১৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৭টি বিশাল ছক্কা। ভিলিয়ার্সের ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গেছে ক্যাপ্টেন মাশরাফি ও তাসকিন আহমেদের ওপর দিয়ে। নড়াইল এক্সপ্রেসের বলেই তিনটি ছক্কা ও চারটি বাউন্ডারি নিয়েছেন। তাসকিনের বলে দুটি ছক্কা ও চার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। সাকিব আল হাসান ও নাসির হোসেনের বল থেকেও একটি করে ছক্কা আদায় করে নিয়েছেন এই প্রোটিয়া মারকুটে।

গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক। তাদের জুটিতে আসে ৯০ রান। আমলা ৯২ বলে খেলেছেন ৮৫ রানের ইনিংস। ডি কক করেছেন ৪৬ রান।

দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের বোলারদের শাসন করেছেন আমলা। অসাধারণ বোলিং করেছেন পেসার রুবেল হোসেন। বার বার বিভ্রান্ত করেছেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের। রুবেলের বলে ছক্কা তো হয়ইনি, বাউন্ডারি হয়েছে মাত্র দুটি। একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।

উপমহাদেশের দলগুলো কখনো দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ছড়ি ঘোড়াতে পারেনি। বাংলাদেশের অবস্থাও যাচ্ছেতাই। তবে একটা জায়গায় মাশরাফিদের সাফল্য ঈর্ষণীয়— দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে টস হারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু টস জয় কি আর ম্যাচে বিধ্বস্ত হওয়ার দুঃসহ স্মৃতি ঢেকে দিতে পারে!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর