শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
সিপিডির আলোচনায় তথ্য

বন্যায় ক্ষতি ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশের বন্যাকবলিত ৩২টি জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এবার আমন মৌসুমে ৩০ শতাংশ ফলন কম হবে। প্রায় মাসব্যাপী চলা আকস্মিক বন্যায় দেশের অর্থনীতির মোট জিডিপির ০.৩৫ থেকে ০.৪৫ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে ১৫ হাজার ১০০ কোটি। এ ছাড়া হাওরাঞ্চলে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায়  তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সিপিডি আয়োজিত ‘বন্যা-২০১৭ পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক সংলাপে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র গবেষক জাফর সাদিক ও ইশতিয়াক বারী। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বন্যা-পরবর্তী সময়ে সংস্কারকাজে পত্র-পত্রিকায় শত শত কোটি টাকা হরিলুটের কথা বলা হলেও তা সঠিক নয়। যেখানে বরাদ্দই আছে ৪২০ কোটি টাকা, যার ২০ মাত্র কোটি টাকা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ, সেখানে লুট হতে পারে, কিন্তু হরিলুট নয়।

তিনি বলেন, এবারের বন্যা গাফিলতি বা অব্যবস্থাপনার কারণে হয়নি। হয়েছে অতিরিক্ত পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে। বন্যা নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সব মিডিয়ায় বন্যা হয়েছে লেখা হয়। কিন্তু কেন হচ্ছে সেটি কোনো মিডিয়ায় আসে না। এ বছরের মতো পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাত আর হয়নি। তবে এ বছর বন্যা দীর্ঘমেয়াদি ছিল না। অধিকাংশ জায়গার পানি পাঁচ-ছয় দিনেই নেমে গেছে। কিছু এলাকায় পানি আছে। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। উপস্থিত ছিলেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।

আইনুন নিশাত বলেন, চলতি বছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এখন এসব সংস্কারের নামে অর্থ হরিলুট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশে বন্যা এখনো আছে। উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি দেরিতে নামার কারণে ধান উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ধান উৎপাদন ৩০ শতাংশ কম হওয়ার আশঙ্কা আছে। বন্যাকবলিত অনেক এলাকার মানুষ এখনো বাঁধের ওপর অবস্থান করছেন। এ ছাড়া বানারিচরে এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি থাকার কথা, তা সরকারের ছিল না। তবে এখন বাঁধ সংস্কারের নামে হরিলুট শুরু হবে।’ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘বন্যা একটি প্রাকৃতিক ও পুরনো দুর্যোগ। কিন্তু এটি নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষকে কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া যায়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কীভাবে কমানো যায়, সে বিষয়েও ভাবতে হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর